নিজস্ব প্রতিবেদক::
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভের পর নিজেদের আত্মশুদ্ধির জন্য তাবলিগ জামাতে গেলেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
গত শুক্রবার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছলেমান আলীর নেতৃত্বে সাধারণ ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের স্বামীদের নিয়ে ১৩ সদস্যের একটি দল (জামাত) নিয়ে তাবলিগ জামাতে যান।
নির্বাচনে জয়ের পর চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তাবলিগে গিয়েছেন নির্বাচিত সদস্যরা। উদ্দেশ্য 'আত্মশুদ্ধি'। নবনির্বাচিত নারী সদস্যরা তাবলিগে যেতে না পারায় তাদের স্বামীদের পাঠিয়েছেন।
এমন ঘটনা ঘটেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছলেমান আলীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি দল তাবলিগ জামাতে গেছে। বিষয়টি এলাকায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এর আগে ১১ নভেম্বর ওই ইউপি নির্বাচনে জয় লাভ করেন তারা। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছলেমান আলী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তাবলিগ জামাতের নিয়ম অনুযায়ী ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ওই দলের (জামাতের) আমির হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেয়ারম্যান নিজেই। সাত দিনে তারা দুই মসজিদে অবস্থান করবেন।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভের পর নিজেদের আত্মশুদ্ধির জন্য তাবলিগ জামাতে গেলেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
এদিকে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্যরা তাবলিগ জামাতে যাওয়ায় ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বেশ আলোচনা চলছে। অন্যদিকে চেয়ারম্যান ও সদস্যরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নামাজের জন্য মসজিদে ডাকায়, দোকানপাট কিংবা বাজারে স্থানীয় শিক্ষার্থী ও যুবকদের আড্ডা দেওয়া থেকে বিরত রাখতে মসজিদে নামাজের জন্য ডাকা বা বাড়িতে পড়তে বসার কথা বলায় স্থানীয়দের রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এমন মহতি উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছলেমান আলী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাবলিগ জামাতে নিয়ম অনুযায়ী ১৩ সদস্য বিশিষ্ট ওই দলের (জামাতের) আমীর হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেয়ারম্যান নিজেই। সাত দিনে তারা দুটি মসজিদে অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কথা হয় দেবনগড় ইউনিয়নের পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা শাহিন আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, জীবনে অনেক চেয়ারম্যান মেম্বার দেখেছি কিন্তু এবারে যারা নির্বাচিত হয়েছে তাদের মতো দেখিনি। নির্বাচনে জয় লাভের তারা নিজেরদের আত্মশুদ্ধির জন্য তাবলিগ জামাতে আসছেন আমাদের মসজিদে। নামাজের জন্য ডাকছেন আমাদের৷ একজন নাগরিক হয়ে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। কারণ, মানুষ চেয়ারম্যান মেম্বার হয়ে কতকিছু আবদার করে আর এরা নামাজ ও সৎ পথে চলার সাহস দিচ্ছে।
একই কথা বলেন ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সব ইউপি সদস্যরা আমাদের এলাকায় মসজিদে জামাতে এসেছে। দেখে অনেক ভালো লেগেছে। জনপ্রতিনিধিরা যদি সৎ হয়, তাহলে একজন নাগরিকও তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন না।
এদিকে ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রথম ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। চেয়ারম্যান আমাদের সবাইকে নিয়ে তাবলিগ জামাতে এসেছে, এতে আমরা অনেক আনন্দিত। তিনি আমাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছেন। আমরা সবাই প্রতিজ্ঞা করছি আমাদের ইউনিয়ন মানুষের সেবা করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকব। কোনো মানুষ যেন তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, কোনো যুবক যেন খারাপ কাজে লিপ্ত না হয়।
এ বিষয়ে ৭নং দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ছলেমান আলী বলেন, গত ১১ নভেম্বর দেবমগড় ইউনিয়নবাসী আমাকে বিপুল ভোটে তাদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন। আমার ইউনিয়নের ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড ও তিনটি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডের মহিলা সদস্যদের স্বামীদের নিয়ে আমরা ১৩ জন তাবলিগ জামাতে এসেছি। আগে থেকেই আমরা নামাজ পড়তাম। নিজেদের আত্মশুদ্ধির জন্য আমরা জামাতে এসেছি। আমাদের ভালোই লাগছে।