বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ নিয়ে একটি প্রোপাগান্ডামূলক প্রতিবেদনের অভিযোগ এনে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে দায়ের করা রিট শুনানিতে ছয়জন এমিকাস কিউরি আদালতে তাদের মতামত দিয়েছেন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি ছয়জন বিশিষ্ট আইনজীবীকে এমিকাস কিউরি নিয়োগ দেয় হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানির জন্য আগামী বুধবার দিন ধার্য করা হয়েছে। ওইদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন শুনানি করবেন বলে জানা গেছে।
আজ যে ছয়জন এমিকাস কিউরি মতামত দিয়েছেন তারা হলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার কামাল-উল আলম, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ফিদা এম কামাল, আব্দুল মতিন খসরু, আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও ড. শাহদীন মালিক।
এমিকাস কিউরিরা এই রিট দায়েরের যৌক্তিকতা, রিটকারীর সংক্ষুব্ধতা, বিটিআরসি’র এখতিয়ার, এ সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন, রেফারেন্স, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিষয়ে নিজ নিজ মত তুলে ধরেন। এমিকাস কিউরিগন তাদের লিখিত বক্তব্যও আদালতে পেশ করেছেন।
‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ শিরোনামে ডকুমেন্টারি প্রচারের প্রেক্ষাপটে কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ ও এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. এনামুল কবির ইমন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি শুনানিকালে রিট আবেদনকারীকে প্রশ্ন করা হয়- আল-জাজিরায় সম্প্রচারিত তথ্যচিত্রে তিনি কীভাবে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন, সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে রিট আবেদনের আগে সংশ্লিষ্টদের উকিল নোটিশ বা ডিমান্ডিং জাস্টিস দেয়া হয়েছিল কি না এবং এই রিটকে তিনি ‘জনস্বার্থে’ বলছেন কীভাবে। জবাবে রিটকারী আইনজীবী মো. এনামুল কবির ইমন বলেন, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন রাখতে এই রিট করা হয়েছে।’
ওইদিন শুনানিতে যুক্ত হয়ে বিটিআরসি’র আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই রাকিব বলেন, আল-জাজিরার কোনো বাংলা ভার্সন নেই। কিন্তু ওই কন্টেনটি বাংলায় করেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে এ সংক্রান্ত ডকুমেন্টারি আর প্রচার না করা হয় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে আদালত আদেশ দিতে পারেন। যেমনটি নোয়াখালীর এক নারীর নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় দেয়া হয়েছিল। আর দেশের মধ্যে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ করা সম্ভব।
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন,ডিমান্ডিং জাস্টিস না দিলেও রিট করা যায়। আল-জাজিরার ওই রিলেটেড ইস্যুতে আরও পর্ব আসতে পারে। বিটিআরসির উচিত ছিল পদক্ষেপ নেয়া। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা নিষ্ক্রিয়তা (ফেলিউর) দেখিয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী মো. এনামুল কবির ইমন বলেন, রিটে বাংলাদেশে আল-জাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামে সম্প্রচারিত প্রতিবেদনটি ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটার থেকে অপসারণের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজিসহ সংশ্লিষ্টদেরকে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়েছে।#
Leave a Reply