সোমবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ অপরাহ্ন

উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার কাজ শুরু

উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার কাজ শুরু

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উখিয়া কলেজ মাঠের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে প্রথম দফায় ২৫টি বাসে রোহিঙ্গাদের নিয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নেয়া হয়। সেখান থেকে জাহাজে তাদের ভাসানচরে পাঠানো হয়। আজ সকালে ৬শ’ পরিবারের ২ হাজার ৫শ’ রোহিঙ্গার ভাসানচরে পৌঁছার কথা রয়েছে। আরও সাড়ে ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে আজ পতেঙ্গা হয়ে ভাসানচরে পাঠানোর হবে। ১ সপ্তাহের মধ্যে এ স্থানান্তর কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানা গেছে।

২৩নং ক্যাম্পের মাঝি আবুল হাশেম বলেন, ভাসানচরে যাওয়ার জন্য কোনো ধরনের জোর দেয়া হচ্ছে না। যারা স্বেচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক তাদেরকেই নেয়া হচ্ছে।

মিজান নামের এক যুবক জানান, বুধবার রাতে ক্যাম্প থেকে তাদের উখিয়া কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে নাস্তা ও খাবার পরিবেশন শেষে বাসে তোলা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কতটি রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচর যাচ্ছে তার কোনো সঠিক তথ্য পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা এখন পর্যন্ত মুখ খোলেননি। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ভিড়তেও দেয়া হচ্ছে না। তবে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার আয়োজন ও নিরাপত্তার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।

স্থানান্তর কাজ শুরুর আগে বঙ্গোপসাগরের দ্বীপ ভাসানচর ঘুরে আসে ২২টি এনজিও প্রতিনিধি দল। এ দলের এক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভূমি থেকে চার ফুট উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে শেল্টার হোম। রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি এ অস্থায়ী আবাসস্থল এখন শহরে পরিণত হয়েছে। সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপারসন জেসমিন প্রেমা জানান, শুধু আগ্রহী রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার কাজ করছে সরকার এবং ২২টি উন্নয়ন সংস্থা। এসব রোহিঙ্গাকে জাহাজে ওঠার পূর্বে বিভিন্ন ডাটা এন্ট্রি সাপেক্ষে বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণের টোকেন ও চাবি হস্তান্তর করা হবে।

তিনি আরও জানান, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আধুনিক বাসস্থান ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সেখানে মহিষ, ভেড়া, হাঁস, কবুতর পালন করা হচ্ছে। আবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি। পরীক্ষামূলকভাবে ধান চাষও করা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে যেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৬০ শরণার্থী বসবাস করতে পারেন সে লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ঘরের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪০টি।

এদিকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী মিয়ানমারে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয় ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana