বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মালয়েশিয়ায় ৬টি পিস্তল সহ ইসরায়েলি নাগরিক আটক: দেশজুড়ে সতর্কতা জারি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ ভুটানের রাজাকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছিনতাইকালে ধরা পড়া দুই পুলিশ সদস্য রিমান্ডে! ২৮ মার্চ জেলা ইসলামী আন্দোলন ইফতার মাহফিল হোটেল অস্টারইকো তে। মিয়ানমারে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিদ্রোহীরা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে মোস্তাফিজ ও বাবুল মিয়ানমারের গ্যং স্টারের বাংলাদেশি সহযোগি হোয়াইক্যং এর দালালরা অধরায়! সাড়ে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা টেকনাফে প্রবেশের অপেক্ষায়! হ্নীলা উম্মে সালমা মহিলা মাদরাসায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ‘মাদকপ্রবণ অঞ্চল’ ঘোষণা করা হলে কী হতে পারে?

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ‘মাদকপ্রবণ অঞ্চল’ ঘোষণা করা হলে কী হতে পারে?

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহর ও কক্সবাজার জেলাকে ‘মাদকপ্রবণ অঞ্চল’ হিসাবে ঘোষণা করে কড়া পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে সরকারের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।

রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যদিও এরকম কোন পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

কিন্তু কীভাবে এসব এলাকায় মাদকের বিস্তার ঠেকানো যায়, এ নিয়ে আলোচনা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

সংসদ সদস্য ও কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে মাদকের ‘প্রবেশদ্বার’ হিসাবে পরিচিত কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। আবার পর্যটন এলাকা হিসাবে খ্যাত কক্সবাজারকে এভাবে চিহ্নিত করা হলে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে-সেই আশঙ্কাও রয়েছে।

বাংলাদেশের একাধিক জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পর বাংলাদেশের সরকার চট্টগ্রাম মহানগর ও কক্সবাজার জেলাকে ‘মাদকপ্রবণ অঞ্চল’ হিসাবে ঘোষণা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।

তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘’আমাদের একটা মিটিংয়ে এরকম একটি বিষয় আলোচনায় উঠেছিল। কথা হয়েছে, কিন্তু আমরা কোন সিদ্ধান্ত বা সুপারিশ করিনি। এটা আসলে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলের বিষয়।‘’

‘’এটা ঠিক দেশে মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে শক্ত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। কিন্তু কোন এলাকাকে মাদক প্রবণ অঞ্চল ঘোষণা করা হলে সেই এলাকা নিয়ে একপ্রকার নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে। ফলে এখানে অনেক কিছু বিবেচনার বিষয় আছে,’’ বলছেন কিশোরগঞ্জ-২ আসনের এই সংসদ সদস্য।

তবে সংসদীয় কমিটি সুপারিশ করেছে যে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কারও যদি রাজনৈতিক পরিচয়ও থাকে, সেটা যেন অপরাধ দমনে কোন বাধা হিসাবে দেখা না হয়।

বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, গত ১৫ই জানুয়ারি এই কমিটির যে সভা হয়েছিল, এই দুটি এলাকাকে মাদকপ্রবণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার একটি কার্যক্রম তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় মাদক চোরাচালান রোধে সীমান্ত সুরক্ষা, স্যাটেলাইট ইমেজারি প্রযুক্তি স্থাপন ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ও কক্সবাজার এলাকাকে মাদকপ্রবণ অঞ্চল ঘোষণার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

যদিও এখনো এরকম কোন ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশে ইয়াবা, আইসের মতো মাদকদ্রব্যে প্রবেশের প্রধান রুট হিসাবে বরাবরই মিয়ানমার সীমান্ত লাগোয়া টেকনাফ ও কক্সবাজার এলাকাকে চিহ্নিত করেছেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে গত পাঁচ বছরে শুধুমাত্র কক্সবাজার জেলা থেকেই আট কোটির বেশি ইয়ারা উদ্ধার করা হয়েছে। গত দুই বছরে এই জেলা থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার আইস উদ্ধার করা হয়েছে।

মাদকপ্রবণ অঞ্চল ঘোষণা করা হলে কী হবে?

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন্স ও গোয়েন্দা) তানভীর মমতাজ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’মাদকের বিরুদ্ধে সবসময়েই তো আমাদের অভিযান চলছে। যেসব জায়গায় মাদকচক্রের কর্মকাণ্ড বেশি, স্বাভাবিকভাবেই সেসব এলাকায় আমরা বেশি গুরুত্বর সঙ্গে নজরদারি এবং অভিযান চালাই।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলছেন, ‘মাদকপ্রবণ অঞ্চল’ ঘোষণার ব্যাপারে তাদের কাছে এখনো কোন তথ্য নেই।

তবে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮-এর সপ্তম অধ্যায়ে এরকম অঞ্চল ঘোষণা করার সুযোগ রয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, ‘সরকার জনস্বার্থে মাদকের ভয়াবহতার বিষয় বিবেচনা করিয়ে দেশের যেকোনো অঞ্চলকে প্রয়োজনীয় সময়ের জন্য বিশেষ মাদকপ্রবণ অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে। সেখানে মাদকদ্রব্য অপরাধ প্রতিরোধের জন্য অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বা ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে।

কিন্তু কীভাবে সেটা করা হবে, কি কি নিয়মকানুন থাকবে, তার বিস্তারিত কিছু সেখানে বলা হয়নি।

অবশ্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে কখনো এই আইনের অধীনে কোন এলাকাকে মাদকপ্রবণ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়নি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন্স ও গোয়েন্দা) তানভীর মমতাজ বলছেন, ‘’এর আগে বাংলাদেশে কখনো কোন এলাকাকে মাদকপ্রবণ অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা দেয়ার উদাহরণ নেই। ফলে এরকম কিছু করা হলে ঠিক কিভাবে কাজ করা হবে, সেটা নিয়ে আরও পর্যালোচনার বিষয় আছে।

তবে কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, সরকার যদি কোন এলাকাকে ‘মাদকপ্রবণ অঞ্চল’ হিসাবে ঘোষণা করে, তখন সেখানে কি ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে, সেটাও নির্ধারণ করে দেয়া হবে।

তার মধ্যে কয়েকটি এজেন্সিকে নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন, বিশেষ অভিযান চালানো, নজরদারি ও চেকপোস্ট বাড়ানো, সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের মতো পদক্ষেপ থাকতে পারে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষক ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এম ইমদাদুল হক বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘মাদকপ্রবণ অঞ্চল’ হিসাবে কোন এলাকাকে ঘোষণা করা মানে হচ্ছে সেটাকে রেড জোন বলে চিহ্নিত করে দেয়া। তার মানে হলো, ওই এলাকায় অপরাধ দমনে সরকার বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে। সাধারণত সেই এলাকার এজেন্সিগুলোকে তখন বিশেষ কিছু ক্ষমতা দেয়া হয়।

সূত্রঃ বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana