বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
এখন স্বাধীন দেশে বসবাস করছি: আগে স্বাধীন ছিলাম না : পীর সাহেব চরমোনাই সতর্ক থাকার আহবান :সেপ্টেম্বরে বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ এখনও অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সুযোগ পেলে আঘাত করবে: মীর্জা ফখরুল হোয়াইক্যং ইউনিয়ন উত্তর শাখা ১০ নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত টেকনাফের মাফিয়া ডন বদি গ্রেপ্তার অতিরিক্ত বিমান ভাড়ার নেপথ্যে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাব সভাপতি তসলিম সিন্ডিকেট যুদ্ধবিরতি হলে ইসরায়েলে হামলা করবে না ইরান ১২ দেশের মুদ্রা নিয়ে পালানোর সময় সাবেক ২ মন্ত্রী আটক:১০ দিনের রিমান্ডে বাংলাদেশে সামরিক পদক্ষেপ নিতে মোদির প্রতি আহ্বান কংগ্রেস বিধায়কের
চীন-তাইওয়ান সংঘাত, দুশ্চিন্তায় পুরো বিশ্ব

চীন-তাইওয়ান সংঘাত, দুশ্চিন্তায় পুরো বিশ্ব

তাইওয়ানের উত্তর উপকূলে একটি মাছের বন্দরে বসে ছিলেন এক মৎস্যজীবী। তার নিজের একটি মাছ ধরার ট্রলার আছে। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘যখন রাজনীতিবিদরা লড়াই করে তখন আমাদের মতো ক্ষুদ্র মানুষ জন সেটির খারাপ ফলাফল ভোগ করে। এর প্রমাণ রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। এটা চলছে গত ছয় মাস ধরে। অনেক দেশ থেকে হাজার হাজার মাইলে দুটি দেশ অবস্থিত হলেও পুরো বিশ্বকেই এই যুদ্ধের মাশুল গুনতে হচ্ছে। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। ফলে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি, বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। অনেক দেশে সরকার পতনেরও আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক অস্থিরতা রূপ নিচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিরতায়। শ্রীলঙ্কা এর সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে রয়ে গেছে। এই আতঙ্কের মধ্যেই চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের এক প্রকার সংঘাত বেঁধে গেছে। মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরকে ঘিরে তাইওয়ান প্রণালিতে যেন যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন কিংবা আমেরিকা কেউই এখন যুদ্ধের ময়দানে পা বাড়াবে না। তবে চীন যে তাইওয়ান দখল করে নিতে পারে, সেটা দেখাতেই বেইজিং যুদ্ধের রিহার্সেল দিতে সামরিক মহড়ার মাধ্যমে আতঙ্ক তৈরি করছে।

যে কারণে দুশ্চিন্তায় বিশ্ব

ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং রাশিয়ার তেলের ওপর পশ্চিমা বিশ্ব নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বিশ্ব বাজার এখন অস্হিতিশীল হয়ে উঠছে। এর মধ্যে তাইওয়ান ও চীনের মধ্যকার সংঘাত আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ তাইওয়ানও এশিয়া তথা বিশ্বের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাইওয়ানকে মাত্র ১৩টি দেশ স্বীকৃতি দিলেও পুরো পৃথিবী এর ওপর নির্ভর করে। তাইওয়ান সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে। বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টরের যে বাজার তার ৬৪ শতাংশই তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণে। শুধুমাত্র তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কো বা টিএসএমসি বিশ্বের অর্ধেকের বেশি সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করে।

স্মার্টফোন থেকে শুরু করে যুদ্ধবিমান, সব জায়গায় দরকার পড়ে এই সেমিকন্ডাক্টর। দেশটির রপ্তানির ৪০ শতাংশই আসে সেমিকন্ডাক্টর থেকে, জিডিপিরও ১৫ শতাংশ নির্ভর করে এর ওপর। এই সেমিকন্ডাক্টরের কারণেই কৌশলগত দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর কাছে তাইওয়ান গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক সামগ্রী, অপটিক্যাল, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, যানবাহন, লোহা, ইস্পাত, জৈব রাসায়নিক, তেলসহ খনিজ জ্বালানি, তামা, মত্স্যজাত পণ্য, চা, মধু, প্রাকৃতিক বালু ও আনারসসহ আরো অনেক কিছু বিশ্বে রপ্তানি করা হয়। এসব পণ্যের রপ্তানি বন্ধ হয়ে বিশ্ব অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খাবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আবার নিজেদের মোট রপ্তানির ৩০ ভাগই চীনে পাঠায় তাইওয়ান।

তাই চীনের যে কোনো নিষেধাজ্ঞাই বড় প্রভাব ফেলে দেশটির উপরে। ইতিমধ্যে তাইওয়ানগামী অনেক বিমানের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। সমুদ্রপথেও জাহাজ চলাচল বন্ধ প্রায়। তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী সু সেং-চাং শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, চীন নির্বিচারে সামরিক মহড়া চালিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ত জলপথ ধ্বংস করে দিচ্ছে। আবার বিশ্বে এখন আরো যেসব সংকট মোকাবিলায় বড় দুই পরাশক্তির মনোযোগ দেওয়া দরকার, সেই চেষ্টায় আগে থেকেই ঘাটতি দেখা যাচ্ছিল, এখন সেটা যেন আরো বেশি ভেস্তে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana