বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক::
টেকনাফের চাঞ্চল্যকর ইসমত আরা হত্যাকান্ডের বিষয়টি চাপা পড়ে আছে। চাঞ্চল্যকর উক্ত মামলা এখন হিমাগারে। সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের নাইট্যং পাড়ায় ২০১৫ সালের ৩রা ডিসেম্বার একটি প্রভাবশালী মহলের হাতে খুন হয় ১৮ বছর বয়সী ইসমত আরা। তার বাবা রেজাউল করিম পেশায় একজন দিনমজুর। হোটেলে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বহু কষ্টে তার সংসার চলে। তার সুন্দরী মেয়ে ইসমত আরার প্রতি কুনজর পড়ে নাইটং পাড়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্রের!
এক পর্যায়ে ঐ চক্রের সদস্য সাবেক মিয়ানমানের নাগরিক ছৈয়দ হোসনের পুত্র ওমর ফারুক বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ইসমত আরার পরিবার বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ১৫সালের ২৯ই অক্টোবর ইসমত আরাকে তার দলবলসহ অপহরণ করে অঞ্জাত স্থানে নিয়ে যায়। ইসমত আরার পিতা দীর্ঘসময় খোঁজাখুঁজির পর কোনো সন্ধান না পেয়ে টেকনাফ মডেল থানায় ৩০ই অক্টোবর একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার নাম্বার ১২৬০।
জানা যায়,২০১৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১২ঘটিকায় টেকনাফ থানার পুলিশ পৌর সভার নাইট্যং পাড়ার মুহাম্মদ ইসমাঈলের ভাড়া বাসা থেকে ফাঁসিতে ঝুলে থাকা অবস্থায় ইসমতআরার লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। ময়না তদন্ত শেষে ইসমত আরার মৃতদেহ তার পিতার নিকট হস্তান্তর করে। এবিষয়ে ইসমত আরার পিতা রেজাউল করিম তৎকালে টেকনাফ থানায় এজহার দায়ের করলে পুলিশ মামলা নেয়নি বরং পুলিশ একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করে। যার নং ০১/১৭-৩-১২-২০১৫। নিহত ইসমত আরা মাতা হাফেজা খাতুন জানায়, তার মেয়ে গলায়, মুখে, দুই হাতে আঘাতে সুস্পষ্ট চিহ্ন দেখতে পায়। এবিষয়ে তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন সংবাদ পত্রে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। নিহত ইসমত আরাকে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের বিচার চেয়ে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের দারস্ত হয়েও বিচার না পাওয়ায় অবশেষে ২০১৫সাণেন ১৫ই ডিসেম্বর কক্সবাজার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে পিতা রেজাউল করিম বাদী হয়ে টেকনাফ পৌর সভার ১ নাস্বার ওয়ার্ডের নাইটং পাড়ার ছৈয়দ হোসনের পুত্র ওমর ফারুক,মৃত আলি জোহারের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম, হাজী সোনা আলীর পুত্র ইসমাইল, ফারুকের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ছেতেরা বেগম ছৈয়দ হোসেনের স্ত্রী সাজু বেগমসহ মোট ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
যার নং সিআর -৩৯ /১৫। বিজ্ঞ আদালত বাদীর আবেদন আমলে নিয়ে টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ কে নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করার জন্য নির্দেশ দেন।আদালতের নির্দেশের পরে নিয়মিত মামলা রুজু করে দুইজন আসামি আটক আদালতে সোপর্দ করেন পুলিশ। দীর্ঘ ৬ বছরেও বাকি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় নিহত ইসমত আরার পিতা রেজাউল করিম বিচারের দাবিতে এখন শুধু কাঁদছে। অপরদিকে আসামিরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে বলে জানান ভোক্তভোগী পরিবার। পরিবারের একটি আকুতি,আমার মেয়ের হত্যার বিচার কি পাবোনা?
মামলার বাদী জানায়,বিবাদীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কৌশলে উক্ত হত্যা মামলা থেকে ৪জন আসামী কে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়। বাদী রেজাউল করিম উক্ত চার্জশিটের বিরুদ্ধে কোর্টে না রাজি দিলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তভার দেয় কক্সবাজার সিআইডি পুলিশ কে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। বর্তমানে তদন্তের কোন অগ্রগতি নেই বলে ও জানান বাদী রেজাউল করিম। তার মতে মামলাটি স্বচল আছে,না হিমাগারে তা দেখার বিষয়।
#
Leave a Reply