বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
এখন স্বাধীন দেশে বসবাস করছি: আগে স্বাধীন ছিলাম না : পীর সাহেব চরমোনাই সতর্ক থাকার আহবান :সেপ্টেম্বরে বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আসনা’ এখনও অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সুযোগ পেলে আঘাত করবে: মীর্জা ফখরুল হোয়াইক্যং ইউনিয়ন উত্তর শাখা ১০ নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত টেকনাফের মাফিয়া ডন বদি গ্রেপ্তার অতিরিক্ত বিমান ভাড়ার নেপথ্যে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাব সভাপতি তসলিম সিন্ডিকেট যুদ্ধবিরতি হলে ইসরায়েলে হামলা করবে না ইরান ১২ দেশের মুদ্রা নিয়ে পালানোর সময় সাবেক ২ মন্ত্রী আটক:১০ দিনের রিমান্ডে বাংলাদেশে সামরিক পদক্ষেপ নিতে মোদির প্রতি আহ্বান কংগ্রেস বিধায়কের
টেকনাফের মাফিয়া ডন বদি গ্রেপ্তার

টেকনাফের মাফিয়া ডন বদি গ্রেপ্তার

টেকনাফের মাফিয়া ডন সাবেক এমপি বদি গ্রেপ্তার
চৌধুরী তারনীম::
কক্সবাজার জেলার বহুল আলোচিত সমালোচিত মাফিয়া ডন সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। টেকনাফের একটি হত্যা চেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার–৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবদুর রহমান বদি।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদির পরিবর্তে তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তারকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
বিগত ১৭ বছর ধরে নানাভাবে আলোচিত-সমালোচিত নাম আবদুর রহমান বদি। ভাই, স্ত্রী, মামা, ভাগিনাসহ স্বজনদের নিয়ে ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগেই সর্বাধিক সমালোচিত তিনি।
আলোচনায় আছেন যখন-তখন মারধর ও বিপুল অর্থবৈভবের কারণেও। মাত্র পাঁচ বছরে ৩৫১ গুণ সম্পদ বেড়েছে তার। মাদকের টাকায় কর দিয়ে এনবিআর থেকে নিয়েছেন তিনি ‘সর্বোচ্চ করদাতার’ প্রেস্টিজিয়াস ক্রেস্টও। নানাভাবে আলোচনায় থাকা এমপি বদির হচ্ছে না শেষরক্ষা। দুদকের দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় গতকাল রোববার কারাগারে যেতে হয়েছে টেকনাফের সমালোচিত এ এমপিকে।
মতের অমিল হলেই কারও গায়ে হাত তুলতে দ্বিধা করেন না বদি। তার এমন উদ্ধত আচরণ থেকে রক্ষা পাননি কেন্দ্রীয় নেতারাও। ২০১৩ সালে তার হাতে লাঞ্ছিত হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি। সে যাত্রায় বীর বাহাদুরের কাছে ক্ষমা চেয়ে বেঁচে যান বদি। এর পরও গত পাঁচ বছরে তার হাতে প্রহৃত হয়েছেন সাবরাং হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুফিজ উদ্দিন, শিক্ষক আবদুল জলিল ও পুলিন দে।
লাঞ্ছিত হয়েছেন কক্সবাজারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল হাকিম, কক্সবাজার সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুর রহমান, উখিয়ার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলামুর রহমান, কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সদস্য ও সংস্কৃতিকর্মী অ্যাডভোকেট রাখাল মিত্র, বনবিট কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা হাজি মোস্তফা সহ সাংবাদিক শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধি কেউ বাদ পড়েনি।

অভিযোগ আছে,দীর্ঘ দিন ধরে টেকনাফের ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ করে বদির পরিবারই। বদির পরিবারের ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্যরা হলেন এমপি বদির আপন ভাই মো. আবদুল শুক্কুর, মজিবুর রহমান ওরফে মুজিব কমিশনার, শফিকুল ইসলাম, সৎভাই আবদুল আমিন, ফয়সাল রহমান, ভাগিনা আবদুর রহমান দারোগার ছেলে নিপু, বেয়াই আকতার কামাল, শাহেদ কামাল, এমপির মামা হায়দার আলী ও এমপির মামাতো ভাই কামরুল ইসলাম রাসেল।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে করা ইয়াবা গডফাদারদের নামের তালিকার শীর্ষে রয়েছে বদির আপন তিন ভাইয়ের নাম। এ ছাড়া ইয়াবা পাচারে ব্যবহৃত গাড়ির তালিকায়ও রয়েছে বদি পরিবারের গাড়ির নাম। ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর টেকনাফ পৌরসভার সাজ্জাদ হোসাইন ও দমদমিয়া এলাকার মো. জাবেরকে ৫০ হাজার ইয়াবাসহ আটক করে বিজিবি। বদির ছোট ভাই আবদুল শুক্কুর মিয়ানমার থেকে বিশাল এই ইয়াবার চালান টেকনাফে নিয়ে আসে বলে বিজিবিকে জানিয়েছিল আটকরা।
টেকনাফ থানায় বদির ভাইকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়। সর্বশেষ এ খাতায় যুক্ত হয়েছে বদির স্ত্রীও। গত ১২ আগস্ট যানবাহনে ইয়াবা রাখার অভিযোগে আটক করা হয় বদির স্ত্রী সাকিকে।
মাদক চোরাচালান, ইয়াবার ব্যবসা, মানব পাচার, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র চোরাচালান- সব অপরাধকর্মের সঙ্গেই জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বদির বিরুদ্ধে।
তার এমন কুকীর্তিতে অতিষ্ঠ আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও। শেষ পর্যন্ত তারা দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর। ২০১০ সালের ১২ নভেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে এমপি আবদুর রহমান বদির অপকর্মের কথা তুলে ধরেন তারা।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় মাদক চোরাচালানের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আব্দুর রহমান বদির নাম রয়েছে। তালিকায় ‘ইয়াবা গডফাদার’ হিসেবে আছেন বদির চার ভাইসহ পরিবারের অন্তত ২৬ জনের নাম । মাদককারবারীদের টাকায় চাল,থামি,নগদ টাকা সাহায্যে র মাধ্যমে তিনি সাজেন উখিয়া-টেকনাফের একমাত্র ফেরিওয়ালা! টেকনাফ স্থল বন্দর,প্রশাসন ও দলে তার ছিল একক আধিপত্য। এমপির পদ ও দলীয় প্রভাব বিস্তার করে বদি কয়েক’শ কোটি টাকার মালিক। দৃশ্য অদৃশ্য, নামে বেনামে তার সম্পদের পাহাড় রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana