সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:০৪ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তদন্তে আজ রোববার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জরুরি সভা হয়। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতা। তাঁদের সামনেই উপজেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও চেয়ার–ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে।
জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ঢাকা থেকে আসা তদন্ত কমিটির দুই সদস্য কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক এস এম রিয়াদ হাসান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান।
সভায় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের বক্তব্য শোনা হয়। সভার শেষ পর্যায়ে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য ফরহাদুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষ তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে হাতাহাতি ও চেয়ার–ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রীয় ও জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে।
জেলা ছাত্রলীগ সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালের ১৩ এপ্রিল সাইফুল ইসলামকে সভাপতি ও নুরুল মোস্তফাকে সাধারণ সম্পাদক করে টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর নুরুল মোস্তফা ছাত্রদলের হ্নীলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সহসভাপতি ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এদিকে ৮ এপ্রিল জুমার নামাজের পর উপজেলার হ্নীলার মৌলভী বাজারে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় দুটি পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে পুলিশ ও উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মামলা করেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বেলাল উদ্দিন। নুরুল মোস্তফার বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সংঘাতে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই বলে মন্তব্য করেন টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এতে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। আমার কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতা টেকনাফে এসে বৈঠক করেন। এ সময় কর্মীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়। পরে জেলার ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফা বলেন, ‘একটি মহল রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেছে। কেন্দ্রীয় কমিটির তদন্ত চলাকালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আমাকে দোষী করার পাঁয়তারা চলছে। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটি আমি মাথা পেতে নেব।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসাইন বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে টেকনাফ গিয়ে বৈঠক করেন তাঁরা। এ সময় স্থানীয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। বিষয়টি ঘটনাস্থলে সমাধান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের তদন্তের বিষয়টি এখনো চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
সূত্র: প্রথম আলো,দৈনিক কক্সবাজার।
Leave a Reply