শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
টেকনাফ-কক্সবাজার মহা সড়কে তীব্র যানজট:বাড়ছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা

টেকনাফ-কক্সবাজার মহা সড়কে তীব্র যানজট:বাড়ছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা

ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বহীনতা ও আইনী পদক্ষেপ না থাকায় মূল কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন স্বচেতন মহল
টেকনাফ-কক্সবাজার মহা সড়কে তীব্র যানজট, বাড়ছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা

মুহাম্মদ তাহের নঈম: কক্সবাজার থেকে ৯০ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে টেকনাফ পৌঁছাতে এক দেড় ঘণ্টা লাগার কথা। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে এখন সময় লাগছে প্রায় চার ঘণ্টা। সড়কজুড়ে হাজার হাজার সিএনজি,টমটম এলোপাতাড়ি পার্কিং করার কারণে তৈরি হচ্ছে এই তীব্র যানজট। বিকল্প মেরিনড্রাইভ সড়কে ভারি যানবাহন চলাচলের নিয়ম না থাকায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে যানবাহনের চাপ আরও কয়েকগুন বেড়ে যায় এই সড়কে। গত শনিবার দেখা যায়, সড়কের কোটবাজার, মরিচ্যা, উখিয়া সদর, কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী পর্যন্ত প্রায় ৪৫ কিলোমিটার সড়ক জুড়েই কোন না কোন ষ্টেশনে লেগেই থাকে যানজট। এরই মধ্যে প্রধান সড়কে সিএনজি,টমটমের দুর্ঘটনা হামেশা লেগেই থাকে। গতকাল রবিবার দুপুর ১২ টায় টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের হোয়াইক্যং লম্বাবিল প্রধান সড়কে পিকাপ-টমটম মুখোমুখী সংঘর্ষে ৪ জন গুরুতর আহত হয়। তম্মধ্যে ২ জনের অবস্থা খুবই আশংকা জনক বলে জানান লম্বাবিলের স্থানিয় ব্যবসায়ী মৌলভী শব্বির। এ ভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা ও আহত নিহত হওয়ার ঘটনা। দুর্ঘটনা এড়াতে দেশে মটরযান আইন থাকলেও তা তোয়াক্কা করছে না চালকেরা । জনসাধারণের সচেতনতার অভাব, চালকদের অসতর্কতা, অবহেলা, আইন-কানুন না জানা, ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বহীনতা এবং আইন বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ না থাকায় যানজটের মূল কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন স্বচেতন মহল।
জানা যায়,টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে প্রতিদিন ছোট–বড় ১০ হাজার যানবাহন চলছে। রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত আছেন ২ হাজার বিদেশিসহ অন্তত ১১ হাজার চাকরিজীবী। তাদের আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে ২ হাজারের বেশি প্রাইভেট কার,নোহা। অপরদিকে রোহিঙ্গা শিবিরে দৈনিক গড়ে ৪ শতাধিক ট্রাকে মালামাল পরিবহন হচ্ছে। অপরদিকে টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্যে আমদানি-রপ্তানির ট্রাক, পর্যটকদের গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে আরও এক হাজারের বেশি। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, জিপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলে আরও ৭ হাজার। ফলে সড়কটিতে বিশ্ব রোডের চেয়ে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক সংস্কার কাজ ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রস্থ ও বেড়েছে সড়কের। তবুও লেগে আছে দীর্ঘ যানজট। এলাকাবাসীরা বলেছেন,প্রশস্থকরা সড়কের উপর অবৈধ পার্কিং এর কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দীর্ঘ যানজটের কারণে গাড়ি চলাচল ছাড়াও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।

সড়কও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে যানজট সৃষ্টি করছে যত্রতত্র ইজিবাইক ও সিএনজি পার্কিং। সওজ সূত্রে আরো জানা যায়,গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দুটি প্রকল্পের অধীনে ৫০ কিলোমিটারের সংস্কার কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত কাজে অগ্রগতি হয়েছে ৯০ শতাংশ। প্রথম প্রকল্পের আওতায় ১২২ কোটি টাকার এ প্রকল্পে ২৫ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে তিন ফুট করে সম্প্রসারণ করে সড়কটি ২৪ ফুট প্রস্থে উন্নীত করা হচ্ছে। কক্সবাজার লিংক রোড থেকে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত কাজের ৯০শতাংশ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় প্রকল্পের আওতায় উখিয়া ফায়ার সার্ভিস থেকে টেকনাফের উনচিপ্রাং পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটারে সড়ক উন্নয়নে ব্যয় হচ্ছে ১৫৪ কোটি টাকা। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এই ৫০ কিলোমিটারের কাজ শেষ হলে তৃতীয় প্রকল্পে অবশিষ্ট ১৮২ কোটি টাকায় টেকনাফ পর্যন্ত আরও ৩০ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নকাজ শুরু হবে।

এদিকে উখিয়া উপজেলার বানিজ্যিক ষ্টেশন কোটবাজারের যানজটের ভয়াবহ অবস্থা ও জনবহুল কোটবাজার ষ্টেশনকে তীব্র যানজটের কবল থেকে রাক্ষা করতে প্রশাসন সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছেন উখিয়ার পরিবহন সংগঠন গুলো। এ উপলক্ষে উখিয়া থানা বহুমুখী মটর চালক সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মোঃ শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক সোলতানা আহমদ, ট্রাক মিনি ট্রাক মালিক সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মোঃ আবদুল মালেক,সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, মিনি পিকআপ সমিতির সভাপতি খোকন, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, সিএনজি সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারন সম্পাদক শরিফ মাহমুদ ও টমটম সমিতির সভাপতি ওবায়দুল হক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জাফর আলম,অর্থ সম্পাদক ছলিম উল্লাহ বাহাদুর সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা গত ৭ নভেম্বর সড়কে অভিযান চালিয়েছে। তারা সড়কের উভয় পার্শে যে কোন ধরনের গাড়ি অবৈধ পার্কিং না করা নির্দেশনা সহ জন সচেতনতা মুলক কাজে ট্রাফিক প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন, এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে সড়কে গড়ে উঠা অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করতে উপজেলা প্রশাসনে অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ছাড়াও তাদের নিজস্ব উদ্যোগে জন গুরুত্বপূর্ণ ষ্টেশন সমুহে মাইকিং করেছে। এদিকে চালকদের দাবি কোর্টবাজার, উখিয়া ও কুতুপালং ষ্টেশনে স্থায়ী কোন পার্কিং এর ব্যবস্থা না থাকায় সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসছেনা। তারা প্রতিটি ষ্টেশনে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা প্রশাসনর নিকট দাবি জানান।#

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana