শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:২৪ পূর্বাহ্ন
মালয়েশিয়ায় কর্মহীন অসংখ্য বাংলাদেশি প্রবাসী না খেয়ে আছেন। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে লকডাউন এবং অচল অবস্থার কারণে বহুমাত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মধ্যে। এরই মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কর্মহীনদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।
করোনার প্রভাব পড়েছে মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে। আবার অনেকের চাকরি থাকলেও পাচ্ছেন না বেতন। তিন মাস ধরে চলছে কঠোর লকডাউন। এই তিন মাসে বেতন না পেয়ে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন মালয়েশিয়ায় প্রবাসী হাজার হাজার বাংলাদেশি। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউন পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ মালয়েশিয়া প্রবাসী চাকরি হারিয়েছেন।
তবে আশার কথা হচ্ছে, মালয়েশিয়ায় গণহারে টিকাদান কার্যক্রম চলছে। এর আওতায় বৈধ-অবৈধ সকল অভিবাসীদের বিনামূল্যে টিকা দেয়া হচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ডোজ টিকা নিলে কর্মীরা কাজে যোগ দিতে পারবেন। তবে দীর্ঘদিনের লকডাউনে এরই মধ্যে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশটির সব খাত। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক কলকারখানা। লকডাউন পুরোপুরি প্রত্যাহার না করে কিছুটা শিথিল করেছে মাত্র। এতেই বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা।
দেশটিতে কর্মরত বেশ কয়েকজন প্রবাসী শ্রমিক জানিয়েছেন, চাকরি হারানোর কারণে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছেন না। নিজেরাও আর্থিক সঙ্কটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি কোনো সাহায্যও মিলছে না এই প্রবাসীদের। দিন যত যাচ্ছে প্রবাসীদের অনিশ্চিয়তা ও উৎকণ্ঠা আরও বাড়ছে।
এই মহামারির কারণে অনেক কোম্পানি কর্মী ছাটাই করছে। আর এটি এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি তার চেয়েও বড় একটি সমস্যা হলো শ্রমিকদের বেতন কমানো। যাদের বেতন আগে ছিলো দুই হাজার আরএম, এখন তাদের বেতন প্রায় অর্ধেক কেটে করা হয়েছে এক হাজার থেকে ১২শ আরএম। এমন পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে থাকা প্রবাসীদের পরিবারগুলোতে আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে শীর্ষ ৩০টি দেশের রেমিট্যান্স আসার মধ্যে মালয়েশিয়া ছিল পঞ্চম অবস্থানে। গত ছয় মাসে গড়ে মাসপ্রতি মালয়েশিয়া থেকে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স যেতো বাংলাদেশে। বর্তমানে চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে গত জুন থেকে জুলাই মাসে রেমিটেন্স নেমে এসেছে ১০৫ মিলিয়ন ডলারে। এর ফলে পঞ্চম অবস্থান থেকে সপ্তম অবস্থানে নিয়ে এসেছে মালয়েশিয়াকে। করোনা মহামারীর প্রভাবে প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর পরিমান আরও কমরা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আয় কমে যাবার পাশাপাশি দেশে আসা কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরা নিয়েও অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন ছুটিতে থাকা প্রায় ২৫ হাজার মালয়েশিয়া প্রবাসী।
Leave a Reply