শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
হোয়াইক্যং ইউপির ঝিমংখালীতে তুচ্ছ ঘটনা কে কেন্দ্র করে হামলা: নারী সহ আহত-৫ খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন, ‘অল্প সময়ে সিদ্ধান্ত: বললেন আইনমন্ত্রী কঠিন সময় পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা আ.লীগের আছে: ওবায়দুল কাদের মার্কিন ভিসানীতি-নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না আ.লীগ: ওবায়দুল কাদের ভিসার বিধিনিষেধ আরোপের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য ‘অপমানজনক ও লজ্জাজনক: ফখরুল আমার ছেলে ওখানে আছে: সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলে করবে, তাতে কিছু আসে যায় না: প্রধানমন্ত্রী পল্টনে ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৫ খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলো পদে পদে হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ: মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি
দানে ধন বাড়ে, কমেনা

দানে ধন বাড়ে, কমেনা

শেখ তারেক হাসান মাহদী :: মানুষের কল্যাণে দান-সদকার ব্যাপারে পবিত্র কুরআন বিভিন্নভাবে নির্দেশ দিয়েছে। বলেছে উৎসাহের কথা। মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ওহে তোমরা যারা ইমান এনেছ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্তুতি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো মহাক্ষতির মুখোমুখি হয়। আমি তোমাদের যেসব রিজিক ও সম্পদ দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। যদি তা না কর, তাহলে মৃত্যুর সময় তোমাকে বলতে হবে, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছু মুহূর্ত সময় দেননি কেন? তাহলে আমি আমার সব সম্পদ আপনার পথে মানুষের কল্যাণে ব্যয় করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’ (সূরা মুনাফিকুন, আয়াত ৯-১০।)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলে, ‘আর তোমরা ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের মুখোমুখি করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদের ভালোবাসেন।’ (বাকারা, আয়াত ১৯৫।)

দানের প্রতিদান সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতইনা উত্তম। আর যদি দান গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্য আরও ভালো। আল্লাহতায়ালা তোমাদের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ তোমাদের সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানেন।’ (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭১।) ‘যারা নিজের ধন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং মানুষকে কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্য পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার।’ (সূরা বাকারা, আয়াত ২৬২।) আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘শয়তান তোমাদের অভাব-অনটনের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়, আর আল্লাহতায়ালা দান করার বিনিময়ে ক্ষমা ও সম্পদ বৃদ্ধির ওয়াদা করেন। বস্তুত আল্লাহপাক সমৃদ্ধিশালী, সর্বজ্ঞানী। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৬৮।)

দান-সদকার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে নূরনবি (সা.) বলেছেন, ‘একটি খেজুর দান করে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করো।’ (বুখারি ও মুসলিম।) হজরত উকবা বিন আমের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে দয়াল নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই দান-সদকা কবরের আজাব বন্ধ করে দিতে পারে। আর কেয়ামতের দিন বান্দাহকে আরশের ছায়ার নিচে জায়গা করে দেয়। (তাবরানি ও বায়হাকি।) হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা.) আরও বলেন, ‘জীবিত থাকা অবস্থায় এক টাকা দান করা, মৃত্যুর পর এক হাজার টাকা দান করার চেয়ে বেশি কার্যকরী। (আবু দাউদ ও মিশকাত।)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা.) আরও বলেন, ‘দান সম্পদ কমায় না, দান দ্বারা আল্লাহ পাক বান্দার সম্মান বৃদ্ধি করেন। কেউ আল্লাহর ওয়াস্তে বিনয় প্রকাশ করলে আল্লাহতায়ালা তাকে বড় করেন।’ (মুসলিম।) হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘এমন কোনো দিন যায় না যে দিন দুজন ফেরেশতা পৃথিবীতে ঘোরাফেরা করে না। তাদের একজন দানশীল ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে থাকে এবং বলেন, হে আল্লাহ! আপনি দানশীল ব্যক্তিকে উত্তম বিনিময় দিন। দ্বিতীয় ফেরেশতা কৃপণের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে বদদোয়া করে বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস ও বরবাদ করুন’ (বুখারি ও মুসলিম।)

রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘দানকারী আল্লাহর খুব কাছে, বেহেশতের কাছে এবং মানুষের প্রিয় হয়। আর দূরে থাকে ভয়াবহ দোজখ থেকে। পক্ষান্তরে কৃপণ অবস্থান করে আল্লাহ থেকে দূরে, বেহেশতের বিপরীতে এবং মানুষের শুভকামনা থেকে দূরে এবং দোজখের একেবারেই কাছে। জাহেল দাতা বখিল আবেদের চেয়ে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়।’ (তিরমিজি।) ইমাম গাজালি বর্ণনা করেন, ‘একবার এক ব্যক্তি কাবা শরিফ তাওয়াফ করছিল। রাসূল (সা.) তাকে দেখে বললেন, হে আল্লাহর বান্দা! আমাকে জানানো হয়েছে, তোমার কৃপণতার কারণে তোমার তাওয়াফ ও সালাত কবুল হচ্ছে না। আল্লাহর কাছে কৃপণ আবেদের চেয়ে দানশীল পাপীর মর্যাদা বেশি। কেননা, কৃপণ দান না করে মানুষের হক নষ্ট করছে। অন্যদিকে পাপী পাপ করলেও দান খয়রাতের মাধ্যমে আল্লাহর বান্দাদের প্রয়োজন পূরণ করতে তৎপর আছে। এখানে পাপী বলতে হাক্কুল্লাহ নষ্ট করার পাপী বোঝানো হয়েছে।’ (কিমিয়ায়ে সাআদাত।)

আসুন! আমরা কৃপণতা ভুলে যার যার সামর্থ্যানুযায়ী মহান আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য মানবতার কল্যাণে বেশি বেশি দান-সদকাহ করি। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে দাতা হিসাবে কবুল করুন। জান্নাতকে আমাদের কাছে করে দিন। জাহান্নামকে দূরে সরিয়ে নিন। আমিন।

লেখক : ইসলামী চিন্তাবিদ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana