জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোয় ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণপরিবহন, মালবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় পরিবহন সংগঠনের নেতারা। হঠাৎ যান চলাচল বন্ধের ঘোষণায় সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষুদ্র যানবাহন জেলা কেন্দ্রিক সড়ক বা চট্টগ্রামের পথে চলাচল করছে। তবে, সেসব যানবাহন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দিগুণ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
কক্সবাজারের রামুর জোয়ারিয়ানা এলাকার বাসিন্দা চট্টগ্রামে বসবাসকারী মুবিনুল হক বলেন, জরুরী কাজে বাড়ি আসার সিডিউল ছিলো শুক্রবার। কিন্তু হঠাৎ গণ ও দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছি। এরপরও নতুন ব্রিজ এলাকায় এসে একটি মাইক্রোবাস পেলেও ২০০ টাকার ভাড়ায় দাবি করছিলো ৪০০ টাকা। তাও সরাসরি না গিয়ে লোকালে যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছে চালক। ফলে বাড়ির জরুরী প্রোগ্রামে যোগ দেয়া সম্ভব হয়নি।
ফেনী এলাকার যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আমিরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে কক্সবাজার আসেন গত মঙ্গলবার। রবিবার আবারো প্রবাসে ফিরে যাবেন বলে শুক্রবার সকালের বাসে কক্সবাজার ত্যাগ করার সিডিউল করে। কিন্তু সকালে হোটেল ছাড়লেও বাসে কক্সবাজার ত্যাগ করতে পারেননি। কিন্তু রবিবার বিদেশের ফ্লাইট ধরতে না পারলে বিমানের বিপুল টাকা লস যাবে তাই, বিকাল তিনটার বিমানে কক্সবাজার ত্যাগ করতে টিকেট নিয়েছেন বলে জানান তিনি। বেলা ১২টার দিকে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে কিটকট চেয়ারের পাশে লাগেজসহ দেখে কথার ছলে তিনি এসব শেয়ার করেন। তিনি বলেন, আরও অনেকে তার মতো সকালে যাবার জন্য অপেক্ষায় থেকেও যেতে পারেননি।
কক্সবাজার তাজ কর্পোরেশন এন্ড ট্রাভেলস সেন্টারের মালিক জানে আলম বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে বিমান টিকেটের জন্য বেশ কিছু কুয়েরি এসেছে। অনেকে নগদে টিকেট করলেও অনেকে চাহিদার সাথে দামের সামঞ্জস্য না হওয়ায় টিকেট কাটেননি।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, হঠাৎ দূরপাল্লার বাস বন্ধ হওয়াতে পর্যটকরা চরম বেকাদায় পড়েছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও।
কক্সবাজার বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, নিয়মানুসারে শুক্রবার-শনিবার কক্সবাজারে পর্যটক আগমন বাড়তি থাকে। তাই শুক্রবারে ফেরার সিডিউলে ২০ হাজারের অধিক পর্যটক আটকে পড়ার বিষয়টি আমাদের অগোচরে রয়েছে। আর গণপরিবহন বন্ধের বিষয়টি জাতীয় ইস্যু। এ ব্যাপারে সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্ত আসার কথা। এরপরও শুক্রবার রাতের অবস্থা দেখে আটকা পড়া পর্যটকদের বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
#