বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ অপরাহ্ন
দেশের বিভিন্ন স্থানে বন বিভাগের জায়গা বেদখলের অভিযোগ বেশ পুরনো। মাঝেমধ্যে নিজেদের জমি উদ্ধারে তৎপরতা দেখালেও গতি পায়নি বন বিভাগের অভিযান। তবে এবার বনের নামে রেকর্ড হওয়া বেহাত জমি উদ্ধারে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট এলাকায় শুরু হবে জমি উদ্ধারে অভিযান।
সোমবার সচিবালয়ে বনভূমির জবরদখল উদ্ধারে গৃহীত ব্যবস্থা গ্রহণসংক্রান্ত বিশেষ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। এতে বলা হয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সংরক্ষিত বনভূমির সব অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জানানো হয়, দেশের ১২টি জেলায় বেশি বনভূমি অবৈধ দখলে আছে। সেসব এলাকার জেলা প্রশাসনের সমন্বয় করে অভিযান চালানো হবে।
জানা গেছে, সারাদেশে এক তৃতীয়াংশের বেশি পরিমাণ বনভূমি দখলদারদের হাতে রয়েছে। দেশের মোট তিন লাখ ৩১ হাজার ৯০৭ দশমিক ৫২ একর সংরক্ষিত বনভূমির মধ্যে এক লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ দশমিক শূন্য ৬ একরই জবরদখল করে রাখা হয়েছে।
মোট ৮৮ হাজার ২১৫ জন দখলকারী দীর্ঘদিন ধরে বিপুল পরিমাণ এই বনভূমির সম্পত্তি দখলে রেখেছেন। তাদের মধ্যে ১৪০ জন দখলকারী ৮২০ দশমিক ৩৪ একর সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে শিল্প-প্রতিষ্ঠান এবং কলকারখানা স্থাপন করেছেন।
পাঁচ হাজার ৯৮২ জন দখলকারী ১৪ হাজার ১৪৯ দশমিক ১৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি জবরদখল করে হাট-বাজার, দোকান, রিসোর্ট/কটেজ, কৃষি ফার্ম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন।
এছাড়া ৮২ হাজার ৯৩ জন ব্যক্তি এক লাখ ২৩ হাজার ৬৪৩ দশমিক ৫৫ একর সংরক্ষিত বনভূমি অবৈধ দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে।
অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার বনবিভাগের অবৈধ দখল করা সংরক্ষিত বন উদ্ধারে অভিযান চালানো হবে।
পরবর্তী সময়ে দেশের অবশিষ্ট অঞ্চলের অবৈধ বনভূমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বনের নামে রেকর্ড হওয়া সব সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধারের এই কর্মসূচি চলমান থাকবে।
বেশি বনভূমি অবৈধ দখলে আছে এমন ১২টি জেলার জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পরিচালিত এ বিশেষ অভিযান মনিটরিং ও সমন্বয় করার জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ও উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হবে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পরিচালিত এসব অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা কামনা করা হয়েছে।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. বিল্লাল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মাহমুদ হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) আহমদ শামীম আল রাজী, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মো. মিজানুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) মো. মনিরুজ্জামান, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয় ও বন অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply