বৃহস্পতিবার, ১৯ Jun ২০২৫, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন
অধরায় হ্নীলার মামা ভাগিনা সিন্ডিকেট!
কোটি কোটি টাকার মাদক খালাস করলেও রয়েছে বহাল তবিয়তে নিরাপদে!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না মাদকের ব্যবসা। টেকনাফ পৌরসভা, টেকনাফ সদর,সাবরাং ইউনিয়নের পাশাপাশি এখন হ্নীলা মাদকের স্বর্গরাজ্য পরিনত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কে ম্যানেজ করে চলছে বড় বড় মাদক খালাসের ঘটনা। পুরাতন আর নতুন কারবারীদের চলছে রমরমা ইয়াবা বাণিজ্য। এসব দেখে সচেতন মহল হতাশ হয়ে পড়েছে।
হ্নীলা ইউপির লেদা, আলীখালী,রঙ্গিখালী,নাটমুড়া পাড়া,ফুলের ডেইল,ওয়াব্রাং, মৌলভীবাজারে রয়েছে ইয়াবার বড় বড় ডিলার। উল্লেখিত পয়েন্ট দিয়েই খালাস করে মাদক।
সন্ধ্যার পর উক্ত এলাকা কারবারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। কারবারীরা রাতে নামি দামী মোটর বাইক দিয়ে ঘনঘন টহল দিয়ে সুযোগ বুজে খালাস করে বড় বড় চালান।
হ্নীলা টপলেভেলের কয়েকজন শীর্ষ কারবারী রয়েছে। তন্মধ্যে এখন সাবেক বর্মী নাগরিক কাছিম(মাছ ব্যবসায়ী)এর পুত্র সাইফুল ইসলাম ভুট্টো,তার ভাগিনা আবু তালেব তথা মামা ভাগিনার শক্ত সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকার মাদক খালাস করছে । জনশ্রুতি রয়েছে, আবু তালেবের পিতা: নুরুল কবির বার্মা থেকে হ্নীলা পুরাতন বাজারে মাছ বেপারি কাছেমের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে উক্ত কাছেমের মেয়ে বিবাহ করে রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। সাইফুল ইসলাম ভুট্টো কাছিমের ছেলে। সাইফুল আবু তালেব সম্পর্কে মামা ভাগিনা। এক সময় তাদের পরিবারের অভাব অনটনে কঠিন সময় পার করেছে । এক সময় নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা ছিল। তাদের দৃশ্যমান বৈধ কোন আয়ের উৎস ছাড়া কোটিকোটি টাকার মালিক। তাদের হাতে রয়েছে যেন আলাদিনের চেরাগ।
গোপনসূত্রে জানা যায়,তাদের সাথে প্রশাসনের গোপন আঁতাত রয়েছে। ফলে তারা ইচ্ছে মত ইয়াবা খালাস করে হ্নীলা সীমান্তের ওয়াব্রাং, ১ নং স্লুইচপাড়া, ফুলের ডেইল,চৌধুরী পাড়া, বিজিবি ক্যাম্পের পাশের রাস্তা, বড় জালিয়া পাড়া, পূর্ব ফুলের ডেইল,এইচকে আনোয়ারের প্রজেক্টের উত্তরের প্রজেক্ট।
সিগনাল পেলেই খালাস করে ইয়াবার বড় বড় চালান। ফলে মাদকের বদৌলতে তারা অসংখ্য দৌলত,স্থাবর অস্থাবর সম্পদের মালিক ছাড়াও নব্য কোটিপতির তালিকায় রয়েছে। অনেক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও আবু তালেব সাইফুল মামা ভাগিনার এই সিন্ডিকেট কোন ভাবেই দমানো যাচ্ছেনা।
খবর নিয়ে জানা যায়,মাছ বেপারী কাছিমের ছেলে সাইফুল ইসলাম ভুট্রো ইয়াবার টাকায় হ্নীলা পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিন পাশে ৫০ লাখ টাকার জমি ক্রয় করেছে । উক্ত জমিতে ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে রাজ প্রসাদ গড়ে তুলার কাজ চলমান রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফুলের ডেইলের শামসুল ইসলাম প্রকাশ বাবুল মেম্বারের পুত্র আল ফায়সাল অপহরণ মামলা সহ হত্যা,মাদক মামলা সহ অনেক মামলা রয়েছে। মামা ভাগিনার উক্ত সিন্ডিকেটের সাথে আব্দুররহমান,আকরামের নাম ও প্রচার আছে। রয়েছে রুমা নামক এক মহিলা মাদক সম্রাজ্ঞী। রমিজ,আনোয়ার,আকরামের রয়েছে আরেক সিন্ডিকেট।আব্দুররহমান,সাইফুল পিতা: আতর বিয়ারী শমসু তাদের রয়েছে আরেকটি সিন্ডিকেট। তাদের সকলের বিরুদ্ধে ইয়াবা,অস্ত্র,হত্যা মামলা রয়েছে। এসব সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ ও ইয়াবার মূল সাপ্লায়ার হচ্ছে মামা ভাগিনা তথা সাইফুল আর আবু তালেব। তারা মিয়ানমার থেকে বস্তা বস্তা ইয়াবা এনে মওজুদ করে ফুলের ডেইলে। তাদের একসময় আওয়ামীলীগের সাবেক এমপির ৩ পুত্র শেল্টার দিলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বিএনপির কতিপয় পাতি নেতার আশ্রয়ে এখন কাজ চলছে গোপনে আর প্রকাশ্যে।
ফুলের ডেইল এলাকার বনি আমিন পিতা মুসলিম, রুস্তম আলী, পিতা: এস আমিন। উক্ত রুস্তম আবু তালেবের নাকি ডান হাত। আবু তালেবের টাকায় অনেক ইটভাটায় শেয়ার আছে রুস্তমের। রুস্তম এক সময় চায়ের দোকানদার হলেও গোপনে অঢেল সম্পদের মালিক। আবু তালেবের হয়ে অনেক জায়গায় বিনিয়োগও করেছে রুস্তম। গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এসব তথ্য ফুটে উঠেছে।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, হ্নীলার শীর্ষ কারবারিদের ৩ টি মাদকের ডিপো রয়েছে হ্নীলা পুরাতন বাজার ও ফুলের ডেইল এলাকায়।
মিয়ানমারের কারবারীরা প্রতিদিন উক্ত ডিপোতে ইয়াবা মওজুদ করে। মাদকের ডিপোর মধ্যে একটি চিহ্নিত ভাড়া বাসা রয়েছে। অভিযোগ আছে, মরহুম আমানুল্লাহ সওদাগরের ভাড়া বাসায় রোহিঙ্গা কারবারীদের আড্ডা জমে প্রতিনিয়ত। স্থানীয় প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। এছাড়া ওয়াব্রাং এলাকায় রয়েছে জনৈক বাহাদুরের নেতৃত্বে ৬০ জনের ইয়াবা সিন্ডিকেট। এ সবের মূলে রয়েছে সাইফুল ইসলাম ভুট্টো,আবু তালেব। তাদের হাত নাকি অনেক উপরে। এই চিহ্নিত কারবারিরা বিজিবিকে ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকার ইয়াবার বড় বড় চালান খালাস করলেও তারা রয়েছে অধরায়, সম্পূর্ণ নিরাপদে এবং বহাল তবিয়তে।
টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ জানায়,তাদের বিরুদ্ধে মাদকের সংশ্লিষ্টতা থাকায় আইনের আওতায় আনতে আইনশৃংখলা বাহিনী কাজ করছে।
এ বিষয়ে সাইফুল ইসলাম ভুট্টো,আবু তালেব সহ কারবারিদের মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র: দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর।
Leave a Reply