শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
মিয়ানমারে সামরিক জান্তা ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো বড় আকারের সামরিক সাফল্য পেয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির জোট জান্তাকে হটিয়ে দিয়ে পূর্ব মিয়ানমারের এক বিশাল অংশ দখল করে নিয়েছে।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামে ওই জোট আসলে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী তিনটি শক্তিশালী বিদ্রোহী বাহিনী নিয়ে গঠিত। তাদের যোদ্ধারা এখন মিয়ানমারের দ্বিতীয় শহর মান্দালয়ের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স, যা ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ নামেও পরিচিত, মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলের জাতিগোষ্ঠীগুলির প্রতিনিধিত্বকারী তিনটি সশস্ত্র সংগঠন নিয়ে গঠিত। মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ বাহিনী হিসেবে উঠে এসেছে এই জোট।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সে কারা আছে?
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সে আছে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি ও তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি। তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি দেশটির পূর্ব দিকে আর আরকান আর্মি পশ্চিমাঞ্চলের বাহিনী।
অতীতে তারা নিজেদের অঞ্চলগুলির জন্য আরও স্বাধীনতা আনতে মিয়ানমারের সরকারী বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করেছে। এখন তারা বলছে যে সামরিক সরকারকে উৎখাত করাই তাদের লক্ষ্য।
অং সান সু চির বেসামরিক নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসে সামরিক সরকার। মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, এমএনডিএএ, মূলত মিয়ানমারের চীন সীমান্ত লাগোয়া শান প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারী কোকাং জনগোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত। কোকাং জাতিগোষ্ঠীর মানুষরা ম্যান্ডারিন ভাষায় কথা বলেন এবং নিজেদের তারা হান-চীনা হিসাবে চিহ্নিত করে।
এমএনডিএএ ১৯৮৯ সালে গঠিত হয়। মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধী এবং চীন সমর্থিত গেরিলা বাহিনী বার্মা কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গঠিত হয়েছিল এমএনডিএএ।
এমএনডিএএ প্রায়শই সরকারি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে কোকাংদের বসবাসের অঞ্চলটির জন্য স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে থাকে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, মাদক ব্যবসার মাধ্যমে তারা নিজেরাই অর্থের সংস্থান করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে ‘মাদক বিদ্রোহ’ নামে অভিহিত করে থাকে।
তাং বা পালাউং নামে পরিচিত জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র বাহিনী তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি বা টিএনএলএ ওই একই উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশের বাহিনী। তারা তাং অঞ্চলের জন্য আরও স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ২০০৯ সাল থেকে সরকারী বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের তৃতীয় বাহিনী আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশের আরাকান জনগোষ্ঠীর সদস্যদের নিয়ে তৈরি। অন্য দুটি বাহিনীর মতোই আরাকান আর্মিও তাদের নিজেদের অঞ্চলের আরও বেশি স্বাধীনতার জন্য ২০০৯ সাল থেকে লড়াই করছে।
“এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর গঠনতন্ত্র নিয়মিত সেনাবাহিনীর মতোই। এরা বিদ্রোহী বাহিনী বা মিলিশিয়ার থেকে বেশি সংগঠিত এরা,” বলছিলেন ফ্রাঙ্কফুর্টের থিংক ট্যাঙ্ক পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ইয়লং শিয়ান।
Leave a Reply