শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ০২:৩৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
সাবরাংয়ে জামায়াতের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত বর্তমানে দেশে ৮০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে বান্দরবানে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর সফল অভিযান মালয়েশিয়া পাচারকালে উনছিপ্রাং এর ৩ কিশোর ৪ মাস ধরে নিখোঁজ: থামছেনা পরিবারের কান্না সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নুরুল আবছারের পরিবারকে কোস্ট ফাউন্ডেশনের ১ লক্ষ টাকা অনুদান হ্নীলা মৌলভী বাজারে বিজিবির গুলিতে আহতদের পাশে দাঁড়ালেন জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী টেকনাফে যুবদলের উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী পালিত জেলা প্রশাসকের সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ হোয়াইক্যং ইউনিয়নে বিনা মূল্যে গবাদীপশুর টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে কোস্ট ফাউন্ডেশন গোটা গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে ইসরায়েল: জালেম নেতানিয়াহু
মালয়েশিয়া পাচারকালে উনছিপ্রাং এর ৩ কিশোর ৪ মাস ধরে নিখোঁজ: থামছেনা পরিবারের কান্না

মালয়েশিয়া পাচারকালে উনছিপ্রাং এর ৩ কিশোর ৪ মাস ধরে নিখোঁজ: থামছেনা পরিবারের কান্না

দালালদের আইনের আওতায় আনার দাবী এলাকাবাসীর: মালয়েশিয়া পাচারকালে উনছিপ্রাং এর ৩ কিশোর ৪ মাস ধরে নিখোঁজ: থামছেনা পরিবারের কান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজারে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে মানবপাচারকারী চক্র। বিশেষ করে কক্সবাজারের টেকনাফ অঞ্চলে এই দালালচক্র নতুন কৌশলে মানুষ পাচারের ফাঁদ পেতেছে। এবার তারা এনজিও’র মিটিং এ প্রশিক্ষণ’ কিংবা “চাকরির সুযোগ” দেখিয়ে স্থানীয় যুবক ও কিশোরদের টার্গেট করছে, এবং পরে কৌশলে পাচার করে দিচ্ছে মালয়েশিয়া। অনেকে মালয়েশিয়া পাচারের সময় ভারতের আন্দামান দ্বীপ, মিয়ানমার বা মালয়েশিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চল থাইল্যান্ডে আটক হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর হাতে। এইসব দালালচক্র মূলত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারকে টার্গেট করে, যাদের সামনে ‘ভালো ভবিষ্যৎ’ ও ‘উন্নত জীবনের স্বপ্ন’ দেখানো হয়। ধোঁকা দেয়া হয় সু কৌশলে।

সম্প্রতি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার শামসুল আলমের ছেলে রিদুয়ান, মৃত মোক্তার আহমদের ছেলে রাসেল,মুহাম্মদ হোসেনের ছেলে দেলোয়ারসহ তিনজন কিশোরকে এনজিওর মিটিংয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দালালরা প্রথমে টেকনাফের নির্দিষ্ট এলাকায় জড়ো করে।

সেখান থেকে জোরপূর্বক মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে ইঞ্জিন চালিত বোটে তুলে দেয় চিহ্নিত দালালরা। এরপর থেকে তাদের আর খোঁজ মেলেনি।
অদ্য ৩০ জুন দুপুরে ভুক্তভোগী পরিবারের সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে এসব তথ্য।

সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিম রিদওয়ান ও রাসেলের মা আজিজা,আমিনা বলেন, রইক্ষ্যং এলাকার মৃত মুহাম্মদ হোছনের ছেলে আবুল কালাম,শামশুল আলমের ছেলে ইবরাহীম,ছৈয়দ হোছাইন মিন্টুর স্ত্রী রেহেনা আক্তার, মৃত কালাম হোছাইনের ছেলে নুর হোছাইন,মৃত নজুম উদ্দিনের ছেলে জসিম উদ্দিন ও জিয়া উদ্দিন বাবুল,নুরুল হকের ছেলে নুর মুহাম্মদ,মৃত শফি আহমদের ছেলে আব্দুল হামিদসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জন দালালচক্র মিলে উক্ত কিশোরদের পাচার করে দেয়। পরবর্তী সন্তানদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি দুই লাখ করে মোট ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই দালালচক্র।
টাকার নেওয়ার পরেও সন্তানদের ফিরে না পেয়ে দালালদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগী পরিবার। এতে মানবপাচারকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে নিখোঁজ কিশোরের পরিবারের উপর হামলা চালায় দালাল চক্র।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সাংবাদিকদের জানায়,মানবপাচারকারী চক্র আব্দুল্লাহ,নুর হোছাইন,মোবারক,রেহানা,ঝিরু গং এর অতর্কিত হামলায় মৃত আব্দুসসাত্তারের ছেলে শমসুল আলম(৪৫) মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ হোছন(৩৮) শামসুর স্ত্রী আজিজা(৪০) ভিকটিম দেলোয়ারের মা রোকেয়া বেগম(৩২) আহত হয়। আহতদের মধ্যে শমসুল আলমের অবস্থা আশংকা জনক বলে জানায় তার পরিবার। উক্ত মানবপাচার চক্র এখনো নিখোঁজ কিশোরদের পরিবার কে হুমকি ধমকি অব্যাহত রেখেছে।

সর্বশেষ খবরে জানা যায়, নিরোপায় হয়ে ভিকটিম দেলোয়ারের পিতা মুহাম্মদ হোসেন বাদী হয়ে মানবপাচারের অভিযোগে ৮ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার মানবপাচার দমল ট্রাইব্যুনাল (৩) একটি মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-সিপি-১৪৬/২০২৫)। অপরদিকে আরেক ভিকটিম রাসেলে মা বাদী হয়ে একই আদালতে ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-১৫২/২০২৫)।

মামলার বাদী মুহাম্মদ হোসেন বলেন,মামলা করার পরে দালালচক্রের ইন্ধনে আব্দুল্লাহ গং আমাদের উপর ২৭/০৬/২০২৫ বেপরোয়া ভাবে হামলা চালিয়েছে। তাদের হামলায় আহতরা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে । হামলার সময় আমার কাছ থেকে মাছ বিক্রির ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত আমাদের মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে।

আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক মানবপাচারকারীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।

আরেক ভিকটিম দেলোয়ারের মা রোকেয়া বেগম বলেন, কেঁদে কেঁদে ছেলে ফিরে আসার অপেক্ষায় ৪ মাস ধরে দিন গুনছি। কিন্তু আমার কলিজার টুকরা সন্তান বাড়ি ফিরে আসছেনা। দালালদের খপ্পরে পড়ে সাগর পথে মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে আমার সন্তান আজ নিখোঁজ। মারা গেছে, না জীবিত আছে তা ও খোঁজ খবর নেই।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায়  কক্সবাজার আদালতে দুটি পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুটি বর্তমানে কক্সবাজার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কাছে তদন্তধীন রয়েছে । এর আগে দালালদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়।

স্থানীয়রা জানান,এলাকার চিহ্নিত মানবপাচারকারী ও তাদের দোসরদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা জরুরী।

এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, মাদক ও মানব পাচারকারী সহ দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
তবে মানব পাচারের শিকার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাংয়ের ৩ কিশোরের বিষয়ে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি খুঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Bangla Webs