শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ০৬:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কক্সবাজার হাইওয়ে পুলিশের হাতে ৪ হাজার ইয়াবা সহ আটক-১ টেকনাফে ট্রিপল মার্ডারের নেপথ্যে : পাত্রী দেখা’ ছিল ফাঁদ, আড়ালে অন্য কাহিনি! টেকনাফের ৩ খুনের নেপথ্যে রহস্য উদঘাটনের আশাবাদী টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল হালিম টেকনাফ নাইট্যংপাড়ায় পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান:১৯ জন মায়ানমারের নাগরিক সহ ৪ মানব পাচারকারী আটক: হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এবার আদালতের দন্ডিত আবছার সভাপতি হতে মরিয়া! বনবিভাগের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ : ভূমিদস্যুদের হুমকি নানা প্রপাগাণ্ডা ও অপপ্রচার! হ্নীলায় সাবকবলা মূলে বিক্রি করা জমি অবৈধ ভাবে জবর দখলে মরিয়াঃ হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগ ৩০ এপ্রিল এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা কক্সবাজারে হাইওয়ে পুলিশ কর্তৃক সিএনজিসহ ৫০ লিটার দেশী মদ উদ্ধার ঈদের চাঁদ কবে উঠবে, জানাল আবহাওয়া অফিস

যে কারণে বাংলাদেশ থেকে মাটি নিতে চায় মালদ্বীপ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১, ৭.৩৬ পিএম
  • ১১১৪ বার পঠিত

বাংলাদেশ থেকে পলিমাটি নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ মালদ্বীপ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।

মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহিদ গত নভেম্বরের শুরুর দিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে ফোন করে দ্বিপাক্ষিক নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। ওই সময় তার পক্ষ থেকে পলিমাটি বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ওই আলোচনার সময় উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের বিষয়েও সম্মতি প্রকাশ করেন।

মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলছেন, খুব শিগগিরই দু দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হবে এবং তখন তাদের আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে পলিমাটি নেয়া এবং সরাসরি জাহাজ চলাচলের মতো বিষয়গুলোও থাকবে।

ঢাকায় পররাষ্ট্র ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, মালদ্বীপকে বালু ও পলিমাটি নেয়ার এ প্রস্তাব বাংলাদেশই প্রথম দিয়েছিল আরও অন্তত চার বছর আগে। বাংলাদেশে তখন বিশেষ করে পায়রা সমুদ্র বন্দরের কাজ শুরুর সময়ে এটি আলোচনায় এসেছিল কারণ ওই বন্দরের জন্য পটুয়াখালীর রামনাবাদ চ্যানেলে ব্যাপক ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিলো। ড্রেজিং ডিস্পোজাল অর্থাৎ ড্রেজিং করে যে বালু ও পলি সরানো হয় সেগুলো রাখা বা সরানোটা ড্রেজিংকে ব্যয়বহুল করে তোলায় বিশেষজ্ঞরা এগুলো রপ্তানির প্রসঙ্গটি সামনে এনেছিলেন বলে জানা গেছে।

হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এম নাজমুল হাসানও বলছেন যে কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশ এমন প্রস্তাব মালদ্বীপকে দিয়েছিলো কিন্তু পরে নানা কারণে তা নিয়ে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। গত বছর আমি দায়িত্ব নিয়ে আসার পর মন্ত্রী মহোদয়ের পরামর্শ অনুযায়ী এ নিয়ে কাজ শুরু করেছি কিন্তু করোনার কারণে খুব বেশি অগ্রসর হওয়া যায়নি। তবে সম্ভাবনাটি অত্যন্ত উজ্জ্বল। কিছু সমস্যার সমাধান করা গেলে এটি বাংলাদেশের জন্য দারুণ বিষয় হবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, তারা এখন দু দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্ভাব্য সফর নিয়ে কাজ করছেন এবং আশা করছেন খুব শিগগিরই একটি সফর অনুষ্ঠিত হবে। ওই সফরের সময় এসব বিষয় আলোচনায় আসবে। আশা করি এরপর টেকনিক্যাল লেভেলে কাজ হবে এবং আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তৈরি হবে। আর তখনি আমরা বলতে পারবো যে আসলে কী পরিমাণ রপ্তানি সম্ভব হবে বা কী প্রক্রিয়ায় সেটা হতে পারে।

ঢাকায় কর্মকর্তারা বলছেন মালদ্বীপের অর্থনীতি চাঙ্গা হতে শুরু করেছে মূলত এক দশক ধরে এবং ২০১২ সালে দেশটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আর মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবার পর সেখানে ব্যাপক অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়েছে।

কিন্তু মালদ্বীপের সাগর থেকে আহরিত বালু দিয়ে নির্মাণ কাজ বা মাটি ভরাটের কাজ করা যায় না বলে দেশটিকে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে পলিমাটি ও বালু আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশের সাথে আলোচনা অগ্রসর না হওয়ায় এক পর্যায়ে এ বিষয়ে ভারতের সাথে একটি চুক্তি করে মালদ্বীপ। পলিমাটি ও বালু নিয়ে ভারতের একটি নীতিমালাও আছে এবং দেশটি মালদ্বীপে রপ্তানির জন্য একটি কোটাও সংরক্ষিত করে রেখেছে।

রিয়ার এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলছেন, মালদ্বীপ দ্বীপভিত্তিক দেশ এবং সেখানে অনেক দ্বীপের ব্যাপক উন্নয়ন করা হচ্ছে। আর আইল্যান্ড বা দ্বীপ তৈরির জন্যই উপরিভাগে বিপুল পরিমাণ পলিমাটি দিতে হয়। আবার কৃষির জন্যও মালদ্বীপ পলিমাটি ব্যবহার করে। তাই কৃষি ও আইল্যান্ড উন্নয়নের জন্য পলিমাটি যেমন দরকার, তেমনি অবকাঠামো নির্মাণের জন্য তাদের দরকার প্রচুর বালু। বাংলাদেশের সিলেটসহ কয়েকটি এলাকার বালুর মান উন্নত বলে এগুলো নিয়ে তাদের আগ্রহ আছে।

বুয়েটের পানি সম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল মতিন বলেন, মালদ্বীপে বালু ও পলিমাটি রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় বাধা হলো পরিবহন সমস্যা।

তিনি বলেন, দু দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল চুক্তি না থাকায় বাংলাদেশ থেকে জাহাজকে সিঙ্গাপুর হয়ে মালদ্বীপ যেতে হয় বলে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যায় অথচ ভারত বা শ্রীলংকা থেকে সরাসরি জাহাজ মালদ্বীপ যেতে পারে বলে তাদের পরিবহন খরচ হয় অনেক কম।

আব্দুল মতিন বলেন, সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে দ্বীপগুলোতে ব্যাপক ভূমি উন্নয়ন কাজ করতে হবে মালদ্বীপকে। তবে বাংলাদেশ থেকে পলিমাটি ও বালু নেয়ার কাজটা খুব সহজ হবেনা। কারণ এটি ব্যয়বহুল এবং জাহাজ চলাচলের মতো অনেক কিছু জড়িত আছে যেগুলো নিয়ে নীতিনির্ধারকদের অনেক কিছু করনীয় আছে। সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারলে অবশ্য সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল।

তবে মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলছেন তারা আশা করছেন যে এবার দু দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সরাসরি জাহাজ চলাচলে একমত হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে দ্রুতই অগ্রগতি হবে। বিবিসির সৌজন্যে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

banglawebs999991
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Bangla Webs