শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
ভারত ছাড়ছেন শেখ হাসিনা, যাচ্ছেন কোন দেশে? শাহজাহান চৌধুরী নেতৃত্বের গুণধর একজন ব্যতিক্রমধর্মী সফল রাজনীতিক যুক্তরাষ্ট্রে দুই লাখ ডলারে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন জয় বাংলাদেশ পুলিশে এসআই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন ফি ৪০ টাকা হাসিনা সরকারের ভিআইপি কারাবন্দীদের সাথে কোনো নিকটাত্মীয়ই দেখা করছেন না তারেক রহমান যে কোনো সময় দেশে ফিরছেন টেকনাফে অস্ত্র দিয়ে যুবককে ফাঁসানোর প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেন ছাত্র-জনতা পুলিশে ৩৬০০ কনস্টেবল নিয়োগ, আবেদন ফি ৪০ টাকা শিক্ষা কমিশনে নাস্তিকদের সরিয়ে ইসলামি শিক্ষাবিদ ও আলেমদেরকে দিতে হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৫৮১ জন শহীদ হয়েছে : স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ কমিটি
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব বিশ্বব্যাংকের

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব বিশ্বব্যাংকের

ডেস্ক রিপোর্ট ::

উদ্বাস্তুদের আশ্রিত দেশের সমাজে অন্তর্ভুক্ত বা রেখে দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব মেনে না নিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিশ্বব্যাংকের ওই প্রস্তাব মেনে নিয়ে ওই সংস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ করলে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বদলে তাদের বাংলাদেশেই চিরতরে রেখে দিতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মন্ত্রণালয়। এজন্য ওই প্রস্তাবের পরিবর্তন না হলে উদ্বাস্তু সংক্রান্ত কোনও অর্থ বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে না নেওয়ার লিখিত মতামত পাঠানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কাছে বিশ্বব্যাংক তাদের প্রস্তাবিত ‘রিফিউজি পলিসি রিভিউ ফ্রেমওয়ার্ক’টি মতামতের জন্য পাঠায় এবং চিঠিতে উল্লেখ করে, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে কোনও মতামত না পেলে ওই প্রস্তাব সরকার মেনে নিয়েছে বলে তারা ধরে নেবে। বিশ্বব্যাংকের এই রিফিউজি পলিসি রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য দেশে অবস্থিত সব উদ্বাস্তুর জন্য প্রযোজ্য।

ওই বৈশ্বিক ফ্রেমওয়ার্কের তিনটি উদ্দেশ্য হচ্ছে‑ ১. উদ্বাস্তু  ও হোস্ট কমিউনিটির জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করা ২. উদ্বাস্তুরা যে দেশে অবস্থান করছে সেই সমাজে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া অথবা তাদের ফেরত পাঠানো এবং ৩. দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, যাতে করে নতুন উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হয়।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আগে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও পশ্চিমা বিশ্বের কিছু দেশ এই তিনটি উদ্দেশ্য আকারে-ইঙ্গিতে বা মুখে বলতো, কিন্তু এই প্রথমবারের মতো তারা বিষয়টি লিখিত আকারে উপস্থাপন করলো।’

বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব মেনে নিলে রোহিঙ্গারা যেকোনও স্থানে চলাচল করতে পারবে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অর্থাৎ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে পারবে বা ব্যবসা করতে পারবে। শুধু তাই না, তাদের নিবন্ধনের আওতায় এনে সামাজিক পরিচয়পত্রও দিতে হবে বলে তিনি জানান।

সামাজিক পরিচয়পত্র

রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে বেশি সম্পদ ব্যয় করছে বাংলাদেশ এবং অন্যান্য অনেক দেশ তাদের দেখ-ভালের জন্য জাতিসংঘকে অর্থ প্রদান করে। এই অর্থ প্রদানের পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে এবং এর ফলে বাড়তি বোঝা বাংলাদেশের ওপর চাপানোর একটি চেষ্টা আছে বিদেশিদের।

এ বিষয়ে আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদেশি অর্থদাতারা চাইছে রোহিঙ্গাদের উপার্জনের ব্যবস্থা, যাতে করে নিজেদের ব্যয় তারা নিজেরাই মেটাতে পারে। এছাড়া তাদের জন্য শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি, অবাধ চলাচলের বিষয়েও তারা জোর দিচ্ছে।’

এজন্য রোহিঙ্গাদের সিভিল নিবন্ধন অর্থাৎ পরিচয়পত্র, জন্মনিবন্ধনসহ অন্যান্য বিষয় চালু করার প্রস্তাব করছে তারা বলে তিনি জানান।

প্রত্যাবাসনই একমাত্র পথ

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার।’

তিনি বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের জন্য যদি আমরা এসব মেনে নিই তবে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি যে লক্ষ্যগুলো আছে সেগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে। এজন্য আমাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে।

উদ্বাস্তু সমস্যা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি তিনভাবে সমাধান করা যায়। একটি আছে অন্তর্ভুক্তিকরণ, আরেকটি হচ্ছে তৃতীয় দেশে সেটেলমেন্ট এবং অপরটি হচ্ছে প্রত্যাবাসন ।

তিনি বলেন, আমাদের জন্য তৃতীয় দেশে সেটেলমেন্ট ফিজিবল না। কারণ, সংখ্যাটি অনেক বড়। যদি সংখ্যা ৩০ বা ৪০ হাজার হতো তাহলে বিভিন্ন দেশে ভাগ করে দেওয়া যেত। কিন্তু সংখ্যাটি ১০ লাখের ওপরে। এখন পৃথিবীর কোনও দেশ এই পরিমাণ মানুষ নেবে না, এটাই বাস্তবতা।

আরেকটি সমাধান হচ্ছে অন্তর্ভুক্তিকরণ, কিন্তু বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ এবং এখানে প্রচুর শ্রমিক আছে। ফলে বাড়তি শ্রমিকের কোনও প্রয়োজন নেই এবং সে সম্ভাবনাও নেই বলে তিনি জানান।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘সুতরাং আমাদের জন্য একমাত্র অপশন হচ্ছে তাদের নিজ ভূমিতে টেকসই ও সম্মানের সঙ্গে প্রত্যাবাসন।’

অন্তর্ভুক্তিকরণের বিষয়ে জাতিসংঘ বা বিশ্বব্যাংক চিন্তা করতে পারে কিন্তু আমরা এটি করতে পারবো না এবং এটি তাদের বারবার স্মরণ করিয়ে দিতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ‘গতবারই তারা আমাদের যখন এ ধরনের ভাষা বা পয়েন্ট বলেছিল তখন তাদের আমরা বলেছি যে এটি আমাদের পক্ষে করা সম্ভব নয়।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের নজরে যেটি আসছে সেটি আমরা পয়েন্ট-আউট করছি এবং সংশ্লিষ্ট যারা রয়েছে তাদের বলছি যে এ ধরনের শর্ত মানা আমাদের পক্ষে সম্ভব না ।

রোহিঙ্গাদের শিক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যদি দিতে হয় তাহলে মিয়ানমারের কারিকুলাম অনুযায়ী দিতে হবে। কারণ, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এই লোকগুলোর মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া। কিন্তু এমন কোনও ধরনের শিক্ষা যেখানে আমাদের এখানে অন্তর্ভুক্তি হওয়ার কোনও সুযোগ থাকবে, এ ধরনের শিক্ষা আমরা দিতে চাই না।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana