বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ অপরাহ্ন
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারো আরএসও সক্রিয়! অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা: ১৪ টি স্কুলের আড়ালে এসব কি হচ্ছে?
বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে দুটি রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প সহ প্রায় ৩৪টি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরএসও ফের তৎপরতা শুরু করেছে। ক্যাম্পে তাদের শক্তি জানান দিতে জড়ো হচ্ছে তাদের সদস্যরা। ফলে ক্যাম্পে অনাকাংকিত ঘটনার আশংকা উড়িয়ে দেয়া যায়না।
রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েকশ জঙ্গিরাই নিয়ন্ত্রণ করছে উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের নয়াপাড়া,লেদা শরণার্থী ক্যাম্প! রাতে তারা ক্যাম্পের অলিতে গলিতে পাহারা বসিয়ে চালাচ্ছে রামরাজত্ব।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আরএসওর সকল দায়িত্বশীল বেতন ভাতা পায় নিয়মিত। মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ান ভুক্ত দেশ থেকে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয় তাদের পিছনে। হুন্ডির মাধ্যমে উক্ত টাকা পরিশোধ করা হয়। সবচে বেশি ফান্ড আসে রমজান মাস ও কুরবানের ঈদে।
আসন্ন মাহে রমজান কে সামনে রেখে সদস্যদের মাসিক বেতন,ইফতারি ও গরীব রোহিঙ্গাদের বিলিবন্টনের নামে ইতোমধ্য নতুন করে বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেছে তাদের ডোনারদের কাছে। মাহে রমজানের আগেই মোটা অংকের একটি বিদেশী বাজেট তাদের হাতে চলে আসে গোপনে।
জানা যায়,
উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সমুহে
বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনেরর মধ্যে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আরএসও। তারা বর্তমানে একক আধিপত্য বিস্তার করছে ক্যাম্প সমুহে।
তারা বেশিরভাগ টার্গেট করেছে উখিয়ার কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প ও টেকনাফের নয়াপাড়া রেজিষ্টার্ড শরনার্থী ক্যাম্প। মিয়ানমারে যাতায়াতের সুবিধা থাকায় টেকনাফের মোচনীয় নয়াপাড়া ও লেদা পুরাতন ক্যাম্প কে আরএসও’র আস্তানা হিসাবে গড়ে তুলেছে। সম্প্রতি আরএসওর শত শত সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ির ঝিরু পয়েন্টের ট্রেনিং সেন্টার থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শেষে উখিয়ার কুতুপালং রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প ও টেকনাফের নয়াপাড়া মোচনীয় ক্যাম্পে ইতোমধ্যে আস্তানা গেড়েছে।
কুতুপালং চার শর মত, আর নয়াপাড়ায় ৩ শতাধিক সদস্য রয়েছে তাদের। একই সাথে মহিলা সদস্য ও রয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্যাম্পের অভ্যন্তরে রহস্যজনক স্কুল!
—————————————
নয়াপাড়া শরনার্থী ক্যাম্পে অভ্যান্তরে তাদের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত ১৪টি প্রাইভেট স্কুল রয়েছে। উক্ত স্কুল সমুহ মূলত আরএসওর অফিস হিসাবে ব্যবহার হয়। স্কুল কেন্দ্রিক তারা সদস্যদের মাঝে রেশন,টাকা পয়সা ও বিতরণ করে রোহিঙ্গাদের কাছে। এ ক্ষেত্রে তাদের সদস্যদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
নয়াপাড়ার রেজিষ্টার্ড ক্যাম্পের এইচ ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ,মাষ্টার সুফিদ, মাষ্টার লাল ভাই,মৌলভী সুলতান,মাষ্টার রফিক,মৌলভী ইয়াছিন,মাষ্টার ইমান হোছাইন,মাষ্টার জাহেদ সহ তথাকথিত ১৪ জন মাষ্টার এই স্কুলের অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত।
প্রশ্ন হচ্ছে এই স্কুল কার অনুদানে চলে? দেশী কোন এনজিওর অনুদান ছাড়া কি ভাবে চলে?
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে উক্ত স্কুল সমুহের নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই স্কুল কে ঘিরে রহস্য লুকায়িত আছে বলে জানান রোহিঙ্গারা। যা তদন্তের দাবী রাখে।
এদিকে ক্যাম্প থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে রাজত্ব কায়েম করছে আরএসও নামের এই সন্ত্রাসী গ্রুপ। এই সন্ত্রাসী গ্রুপের কারণে প্রায়ই ঘটছে হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের জঘন্যতম অপরাধ। এছাড়া
টেকনাফ-উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে চলছে তাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ। এসব ক্যাম্প এখন জঙ্গি সংগঠন আরএসওর নিরাপদ ঘাঁটি। দুর্গম অরণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে প্রশিক্ষণকেন্দ্র। একাধিক বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, তারা গোপনে জেলার ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সংগঠিত করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে রোহিঙ্গা জঙ্গি সংগঠন আরএসও। তাদের শক্তি জানান দিতে বিভিন্ন ক্যাম্প জড়ো করা হচ্ছে তাদের সক্রিয় সদস্যদের।
বিশেষ সূত্রে জানা যায়,
রোহিঙ্গাদের আরেক জঙ্গি সংগঠন আরসা(ARSA)আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ নামক এই সংগঠনের ক্যাম্প কেন্দ্রিক নেতাদের গুম,খুন করতেই তাদের এই পরিকল্পনা। ফলে এই বিবদমান দুই রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্টির সহিংস ও অনাকাংকিত ঘটনা ক্যাম্পের শান্ত পরিবেশ কে অশান্ত করার একটি নীলনকশা ও বটে। এই দুই গ্রুপেরর সকল কার্যক্রমেরর উপর সরকারী গোয়েন্দা নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা।
অর্থ যোগানদাতা:
————————
মজলুম রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবনযাপনেরর কথা বলে
থাইল্যান্ড,তুর্কি,মালয়েশিয়া,সৌদিআরব,দুবাই,বাহারাইন থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে মোটা অংকের ফান্ড সংগ্রহ করে চট্রগ্রামে স্বপরিবারে অবস্থান করা মিয়ানমারের নাইচং এলাকার করিম। যার বার্মিজ নাম কুকিলিং। বর্তমান আরএসওর মাষ্টারমাইন হচ্ছে করিম ওরপে কুকুলিং। তার কাছেই উক্ত বিদেশী টাকার মোটা চালান আসে। এর পর কুকুলিং থেকে উক্ত টাকা নয়াপাড়া এইচ ব্লকের বাসিন্দা ও মাষ্টার মংচিং এর পুত্র শাকেরের নিকট জমা হয়। শাকের ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় বিলি বন্টনের জন্য নয়াপাড়া রেজিষ্টার্ড ক্যাম্পের মাষ্টার আহমদুল্লাহ কে দায়িত্ব দেয়। মাষ্টার আহমদুল্লাহ ই-ব্লকের মাষ্টার জাহেদ ও ক্যাম্প লীডার( চেয়ারম্যান)মাষ্টার ইসলাম কে নিয়ে আরএসওর(RSO) সদস্যদের মধ্যে তা বন্টনের করে।
সব মিলে আরএসর ভয়ংকর পরিকল্পনা ক্যাম্প কে অস্থিতিশীল ও ঘোলাটে করবে অভিমত সাধারণ রোহিঙ্গাদের। একই সাথে ক্যাম্পে ঘাপটি মেরে থাকা আরসার কার্যক্রমের উপর ও প্রশাসনিক নজরদারী প্রয়োজন।#
Leave a Reply