শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪১ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
হোয়াইক্যং ইউপির ঝিমংখালীতে তুচ্ছ ঘটনা কে কেন্দ্র করে হামলা: নারী সহ আহত-৫ খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন, ‘অল্প সময়ে সিদ্ধান্ত: বললেন আইনমন্ত্রী কঠিন সময় পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা আ.লীগের আছে: ওবায়দুল কাদের মার্কিন ভিসানীতি-নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করে না আ.লীগ: ওবায়দুল কাদের ভিসার বিধিনিষেধ আরোপের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য ‘অপমানজনক ও লজ্জাজনক: ফখরুল আমার ছেলে ওখানে আছে: সম্পদ বাজেয়াপ্ত করলে করবে, তাতে কিছু আসে যায় না: প্রধানমন্ত্রী পল্টনে ব্যাংকে ঢুকে ২০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২ পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৫ খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে আগের দুটি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলো পদে পদে হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ: মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি
সপ্তাহে ২০ ফ্লাইট যাবে সৌদি

সপ্তাহে ২০ ফ্লাইট যাবে সৌদি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ঢাকা থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে আজ থেকে সপ্তাহে ২০টি করে ফ্লাইট যাবে। এর মধ্যে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের ১০টি এবং বিমান বাংলাদেশের ১০টি। এর মাধ্যমে দ্রুতই অধিক সংখ্যক প্রবাসী সৌদি যেতে পারবেন বলে আশা করছি। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বুধবার ছয় দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ইরাক, কাতার, ওমান, সৌদি আরব, আবুধাবি ও মালয়েশিয়ার কূটনীতিকরা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ চৌধুরী বৈঠকে ছিলেন। এদিকে টিকিটের জন্য বুধবারও বিমান ও সাউদিয়ার অফিসে ভিড় করেছেন সৌদি প্রবাসীরা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব ছাড়া অন্য কোনো দেশে শ্রমিক পাঠানো নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সংযুক্ত আরব আমিরাত ফ্লাইট সংখ্যা আরও বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, আমরা কূটনীতিকদের অনুরোধ করেছি সৃষ্ট সমস্যাগুলো মানবিক দিক বিবেচনায় রেখে সমাধান করতে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন, আটকে পড়া শ্রমিকদের কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান যদি নিতে চায়, যেতে দেবেন। কোনো কর্তৃপক্ষ যদি নিতে না চায়, তাহলে তারা কিছুই করতে পারবেন না। তবে ওই শ্রমিকরা যদি পরিচিতজনদের মাধ্যমে বিকল্প কোনো কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা করতে পারেন, তাহলে তারাও যেতে পারবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, চাকরিদাতা যদি শ্রমিক নিতে না চান, তাহলে তো সেখানে পাঠানো যাবে না। তারা দক্ষ শ্রমিক, তারা নতুন করে যেতে পারবেন। সেটা না হলে তারা দেশে কিছু করবেন। বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের জন্য সরকার এরই মধ্যে ৭০০ কোটি টাকার সহায়তা তহবিল ঘোষণা করেছে। প্রয়োজনে এর পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।

মন্ত্রী বলেন, গত মার্চে যেসব ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল; কিন্তু তারা যেতে পারেননি, তাদের নতুন করে ভিসা ইস্যুর কাজ শুরু করেছে সৌদি আরব। এমন সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। আর এসব ব্যবস্থাপনার জন্য সৌদি দূতাবাসে ৭ জন কাজ করছে বলে জানিয়েছে তারা। ড. মোমেন আরও বলেন, এখন পর্যন্ত সৌদি ফেরত ব্যক্তিদের মধ্যে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তার সংখ্যা মাত্র ৫৩ জন। তারা লিখিতভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর প্রায় ৫-৬ হাজার লোক চলে গেছেন। তারা হয়তো তার কর্তৃপক্ষকে খুঁজে পেয়েছেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন মূলত দুই ধরনের লোক নিচ্ছে সৌদি আরব। যারা দেশে এসে আটকা পড়েছেন এবং মার্চে যাদের ভিসা হয়েছিল; কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে যেতে পারেননি। নতুন করে সৌদি কোনো শ্রমিক নেবে কি না, সে বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি।

আন্দোলনরতদের সম্পর্কে ড. মোমেন বলেন, সৌদি যাওয়ার বিষয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার কিছু নেই। যাদের কর্তৃপক্ষ তাদের নিতে আগ্রহী, তাদেরকে সেদেশে পৌঁছাতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এ ইস্যুতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। তবে এটাও ভেবে রাখতে হবে, সবার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। সেটা মেনেও নিতে হবে। এসব ব্যক্তি কেউ অন্য দেশে যেতে পারেন। নইলে দেশেও কিছু করতে পারেন। সরকার তাদের জন্য সহায়তা দিচ্ছে। তিনি বলেন, আজকের সভায় সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বেশির ভাগ রাষ্ট্রদূতই আসেননি। তারা তাদের দেশে অবস্থান করছেন। তবে তাদের প্রতিনিধিদের আমরা অনুরোধ করেছি। এরপরও নেতিবাচক সিদ্ধান্তও চিন্তা করে রাখতে হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতির শুরুতে আপনারা বলেছিলেন ১০ থেকে ১৫ লাখ প্রবাসী দেশে ফিরে আসবে। আমরা বলেছিলাম, এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না। দেখুন, মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার শ্রমিক ফেরত এসেছেন। আমাদের প্রবাসীরা খুবই স্মার্ট, তারা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছে। আমরা তাদেরকে বলেছিলাম, থাকতে পারলে থেকে যান। বেশির ভাগ প্রবাসীই আমাদের কথা শুনেছেন। এখন তারা ভালো রয়েছেন।

টিকিটের জন্য হাহাকার : সৌদি প্রবাসীদের ভিসা ও ইকামার মেয়াদ বৃদ্ধি, টিকিট ও টোকেন সমস্যার এখনও সমাধান হয়নি। বিগত দিনের মতো বুধবারও সকাল থেকে মতিঝিলের বিমান অফিস এবং কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের সেলস সেন্টারে টিকিটের জন্য ভিড় করেন তারা। তবে অন্যদিনের চেয়ে বুধবার সংখ্যা ছিল কম। এদিন সড়ক অবরোধ বা কোনো বিক্ষোভও হয়নি।

মতিঝিলে বিমান অফিস থেকে ৩১ মার্চ জেদ্দা রুটে, ২৪-২৫ মার্চ রিয়াদ রুটে, ২১ থেকে ২৪ মার্চ দাম্মাম রুটের যাত্রীদের টিকিট রি-ইস্যু করেছে বিমান। সাউদিয়া এয়ারলাইন্স ২৭০১ নম্বর থেকে ৩০০০ নম্বর টোকেনধারীদের টিকিট রি-ইস্যু করেছে। বিমানের টিকিট পাওয়া এক সৌদি প্রবাসী বলেন, তার ভিসা ও ইকামার (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) মেয়াদ রয়েছে আর এক মাস। টিকিট নিতে তিনি সকালেই এসেছেন। টিকিট পেতে তার কোনো সমস্যা হয়নি।

ভিসার মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিন মাস বাড়ানো এবং টিকিট ও টোকেনের দাবিতে কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করে আসছেন সৌদি প্রবাসীরা। সরকার ও সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে আশ্বাস দিলেও কার্যত এখনও সমাধান হয়নি। যাদের ভিসা ও ইকামার মেয়াদ বুধবার শেষ হয়েছে তাদের আর বাড়ানো হয়নি। সৌদি দূতাবাস থেকে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর যে পাঁচটি শর্ত দেয়া হয়েছে, তা একজন প্রবাসীর পক্ষে পূরণ করা কঠিন। এমন পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন কয়েক হাজার সৌদি প্রবাসী। তারা সৌদি দূতাবাস ও বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিতে যোগাযোগ করেও কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যাওয়া প্রবাসীদের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের সদস্য মো. মনির বলেন, আমরা ইকামা, ছুটির মেয়াদ, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া ২০০ জনের তালিকা দিয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারা সৌদি দূতাবাসে তালিকা পাঠাবেন। কিন্তু পাঠানো হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana