বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫২ অপরাহ্ন
রাতে অবৈধ অস্ত্রের টহল,একের পর এক ইয়াবা ছিনতাই,লুটপাটে প্রশাসন নিরব!
হোয়াইক্যং ইউপির রইক্ষ্যং’য়ের আবুল ও বাবুল বাহিনীর হাতে এলাকাবাসী জিম্মি
নিজস্ব প্রতিবেদক::
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষ্যং এলাকায় আবুল কালাম ও বাবুল বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। রাতে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে টহল দেয় তারা। তাদের অপকর্মে বাধা দেয়ার সাহস নাকি কারো কাছে নেই। তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার ও টেকনাফের বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও স্থানিয় পত্রিকায় তথ্যনির্ভর প্রতিবেদন প্রকাশিত হবার পর স্থানিয় এক যুবকদের মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং তার বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে। এ বিষয়ে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে পুলিশের এসআই মুজিবর সঙ্গিয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে ঘুরে চলে যায়। আসামী উক্ত বাহিনীর বেশ কয়েকজন কে হাতে নাতে পেলে ও রহস্যজনক কারণে নিরবে চলে আসে। এ ঘটনায় এলাকায় নানা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এদিকে রইক্ষ্যং এর এই অপরাধী চক্র উক্ত বাবুল বাহিনী কে আইনের আওতায় না আনা হলে এলাকায় খুন খরাবীর আশংকা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায়না! এমনটি মন্তব্য এলাকার স্বচেতন মহলের।
তথাকথিত উক্ত বাহিনী বর্তমানে দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। তাদের সাথে রইক্ষ্যং এর কিছু নামিদামী মানুষের উঠাবসা ও গোপন আঁতাত রয়েছে। যারা তাদের কে রক্ষা করতে গোপনে কাজ করে। ছিনতাই,মুক্তিপণ আদায়, রোহিঙ্গাদের ইয়াবা লুটপাট,স্বর্ণ লুট,গুম সহ নানা অভিযোগ রয়েছে রইক্ষ্যং এর এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। তাদের কাছে রয়েছে ভারি অস্ত্রশস্ত্র। এলাকার একাধিক বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, তাদের ভারি অস্ত্র নিয়ে সম্প্রতি মিয়ানমারে গিয়ে স্বর্ণ লুট করে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে উক্ত বাহিনীর দুই সদস্য গুলিবিদ্ধ হলে দেশে এসে গোপনে চিকিৎসা করে। জসিম ও বাবুলের শরীরে এখনো গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে সূত্র জানায়। গত ২৪ মে ২০২১ আনুমানিক ৩ ঘটিকায় রইক্ষ্যং বনবিট( ফরেষ্ট অফিস) এর নিকটে দিনদুপুরে ৫/৬ রাউন্ড এলজি ফায়ার করে ৫ কার্ট ইয়াবা ও ১০ টি স্বর্ণের বার এর একটি চালান ছিনিয়ে নেয়ারও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী সাংবাদিকদের জানায়, রইক্ষ্যং উত্তর পাড়ার এই চিহ্নিত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ জন রয়েছে । তাদের মধ্যে মোঃ হোছনের পুত্র আবুল কালাম, নজুম উদ্দিনের পুত্র বাবুল,জসিম,ওমর মিয়ার পুত্র আবুল কাশেম প্রকাশ বাড়ু, রফিক পিতা, কুরবান আলী,ভুলুর দুই পুত্র যথাক্রমে বিজল,কাজল, শাহাব উদ্দিন,তাদের কে আড়ালে থেকে লীড বা শেল্টার দেয় আবুল কাশেম ওরফে হাছিম। জনশ্রুতি রয়েছে, উক্ত কাশেম(মেম্বারপ্রার্থী) লুটকরা ইয়াবা ও স্বর্ণ কমমূল্যে কিনে নিয়ে ছড়া দামে বাহিরে বিক্রি করে। তার ভাই আবুল কালাম এসব কাজে নিজেদের শক্তি যোগাতে ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জনৈক “গুনজাইয়্যা”র নিকট থেকে ৯ এমএম. পিস্তল ও অপর একটি ১৮ রাউন্ড ম্যাগাজিন ও ছিনিয়ে নিয়েছিল। উক্ত অস্ত্র প্রায় সময় জসিম ও বাবুল বহন করে থাকে। অনেক সময় রোহিঙ্গাদের নিকট সোর্স মারফত ইয়াবার চালান ক্রয় করার কথা বলে রইক্ষ্যং বিট অফিসের পশ্চিমে এনে মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে অস্ত্র উচিয়ে চলে যায়। ছিনিয়ে আনা উক্ত মালামাল জমা রাখে কাশেম ও কালাম দুই সহোদরদের নিকট। এভাবে উক্ত বাহিনী নিজেদের আইনশৃংখলা বাহিনী পরিচয় দিয়ে নাফনদী ও ক্যাম্পের প্রবেশদ্বারে রোহিঙ্গাদের স্বর্ণ ও ইয়াবা লুটপাটের ঘটনা ও কম ঘটায়নি বলে জানান এলাকাবাসি ।
তৎমধ্যে শাহাব উদ্দিন কিছুদিন আগে অস্ত্র সহ আটক হয়ে জামিনে বেরিয়ে এসে উক্ত বাহিনীর সাথে যোগ দেয়। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,তাদের সাথে আলী আকবরের পুত্র লেডাইয়্যা ও জড়িত রয়েছে। লেডাইয়্যা প্রায় সময় নাফনদীতে মাছ ধরার ভাঁন করে ইয়াবা কোনপথে,কে বা কারা কখন আনে তা তথ্য দেয়। তার তথ্য পেলেই উক্ত বাহিনী অস্ত্রসহ নেমে পড়ে অভিযানে। এভাবে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবরের পর থেকে ডাকাতি ছিনতাই,অপহরণ বাণিজ্যে অঢেল সম্পদের মালিক বনেছে তারা। একেক জনের এন্ড্রয়েড মোবাইল দেখলে সহজেই বুজা যাবে তারা কত বিত্তবৈভবের মালিক! অথচ উক্ত বাহিনীর প্রধান আবুল কালাম ও তার সেকেন্ড ইনকমান্ড বাবুলদের একসময় নুন আনতে পানতা পুরায় অবস্থা ছিল। এলাকাবাসী আরো জানায়, উক্ত বাহিনী গভীর রাত পর্যন্ত রইক্ষ্যং ফুলগাছ তলায় মোটা টাকায় ক্যাসিনোর আসর বসায়। প্রতিরাতে ৩/৪ লাখ টাকার জুয়া খেলে। এই টাকার উৎস কি? জাতি জানতে চায়। তবে অভিযুক্তদের সাথে সরেজমিনে গিয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। আবুল কাশেম(মেম্বারপ্রার্থী) জানান, সকল তথ্য সঠিক। তবে আমি এই এসবের সাথে দ্বারে কাছেও নেই!
স্থানিয়দের মতে পুলিশের অভিযান শিথীল হওয়ায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে সমাজটাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের এই অপকর্ম রুখবে কে? সচেতন মহলের এটিই প্রশ্ন। দ্রুত তাদের বিরুদ্ধ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে গোয়েন্দা সংস্থা ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়ারা।
#
Leave a Reply