শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪১ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
হ্নীলার হোছন মেম্বারের হামলায় মাওলানা আব্দুল গফুর আহত

হ্নীলার হোছন মেম্বারের হামলায় মাওলানা আব্দুল গফুর আহত

বিশেষ প্রতিবেদক::
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে বিচার প্রার্থীর উপর একই পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হোছন আহম্মদের হামলায় হ্নীলার আল্লামা সদর সাহেব হুজুরের জামাতা মৌলানা আবদুল গফুর গুরুতর আহত হয়েছে। বহু বিতর্কিত হোছন মেম্বার দলীয় দাপট দেখিয়ে পবিত্র রমজানে বরেন্য আলেমেদ্বীন মাওলানা আব্দুল গফুরের উপর হামলার ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

গত রবিবার (০২ মে) বিকাল ৩ ঘটিকার সময় হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন মৌলানা আবদুল গফুরের পরিবার। হোছন মেম্বারের হামলায় তার ডান হাতের গিড়া মচকে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়,মৌলভী গফুরের মালিকানাধী জমিতে দীর্ঘ ২/৩ মাস যাবত অবকাঠামো নির্মাণ কাজ করে আসছিল তার পরিবার। পার্শবর্তি জমি হোছন মেম্বারের বলে ভূঁয়া দাবী তুলে পরিষদে বিচার দেয়। চেয়ারম্যান উভয়পক্ষ কে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পরিষদের আসার দিনক্ষণ ঠিক করে। উক্ত বিষয়টি সমাধানের লক্ষে হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বিচারের কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে যায় মৌলানা আবদুল গফুর ও হোছন মেম্বার কে। চেয়ারম্যান অন্য বিষয়ে কথা বলার সময় হোছন মেম্বার নানা উস্কানিমূলক কথাবার্তা শুরু করে এবং মাওলানা আব্দুল গফুর কে অশ্রাব্ধ ভাষায় গালমন্দ করে। এক পর্যায়ে হোছন মেম্বার ও তার বাহিনী চড়াও হয়।
দেশের গ্রামীণ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল “গ্রাম আদালত” তথা সর্বনিন্ম আদালত ইউনিয়ন পরিষদের কি করে চেয়ারম্যানেরর উপস্থিতিতে একজন মেম্বার বিচার প্রার্থীর উপর হামলা করতে পারে? এ প্রশ্ন হ্নীলা ইউনিয়নবাসীর।
গ্রাম আদালতে যদি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নাই থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কি হবে এ প্রশ্ন স্বচেতন মহলের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,মৌলানা আবদুল গফুরের পিতা আজম উল্লাহর ক্রয় সূত্রে প্রাপ্ত জমি (হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে) যার বিএস ৭২ নং খতিয়ান। এই খতিয়ানে মৌলানা আবদুল গফুরের পিতা আজম উল্লাহর ক্রয় করা জায়গা থেকে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর কিছু জায়গা অধিগ্রহণ করেন। অধিগ্রহণের জায়গা বাদ দিয়ে আজম উল্লাহ ফকির পিতা ছমি উদ্দিনের নামে ৩০ শতক জমির চুড়ান্ত প্রচার আছে। আজম উল্লাহ ফকিরের মৃত্যুর পর আজম উল্লাহ ফকিরের স্ত্রী, এক ছেলে এক কন্যা ওয়ারিশ হিসাবে রেখে যান। সেই তিন জন ওয়ারিশানের নামে বিএস, বর্তমানে ডি.আর.আর. ৪৫৮ নং খতিয়ানে অংশ উল্লেখ করে ২৮ শতক জমি সৃজিত খতিয়ানে প্রচার আছে। যা দীর্ঘ ৬০/৭০ বছর ধরে ভোগ দখলে আছেন মাওলানা আব্দুল গফুরের পরিবার। তাদের ভোগদখলীয় জমির পাশে অসদুপায়ে হোছন মেম্বার কিছু জমির বায়না করে। একটি অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়, হোছন মেম্বার দলিল লিখক হওয়ার সুবাদে গোপনে একটি ভুঁয়া দলিল ও সৃজন করে। মৌলভী গফুরের বৈধ জমি দখল করতে না পেরে হোছন মেম্বার ক্ষেপে যায় তার উপর। অবশেষে পরিষদের লংকাকান্ড ঘটনায় মেম্বার। এ ছাড়া ও হোছন মেম্বার সরকার দলীয় লোক হওয়ায় ক্ষমতার দাপটে পানখালীর মরহুম মৌলভী কাশেম,মুখতার,ইউনুছ,প্রবাসী মোঃআলম সহ অসংখ্য মানুষের জমিতে কুনজর দেয়। ভুমি দস্যু হিসাবে সুখ্যাতি ও রয়েছে তার।

পরিষদে সংঘটিত ঘটনার বিষয়ে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, “ঘটনার সময় আমি পরিষদের নীচে একটি এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলছিলাম। ঘটনার স্বর চিৎকার শুনে আমি উপরে উঠে দেখি মৌলানা আবদুল গফুরের হাতের স্কন্ধের গিরা মচকে গেছে। আমি মৌলানা আবদুল গফুরকে হাসপাতালে নিতে বলি। ঘটনা সম্পর্কে আমি আমার সচিব এবং উপস্থিত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জেনেছি, মৌঃ আবদুল গফুরের ছেলেকে হোছন মেম্বারের লোকজন আক্রমন করেছে। সেই সূত্র ধরে হোছন মেম্বারকে তার ছেলে পরিষদে ডেকে নিয়ে আসে” এমনটাই শুনেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মৌলানা আবদুল গফুরের ছেলে হোছন মেম্বারকে মোবাইল ছুড়ে মেরেছে বলেও শুনেছেন।
এই ঘটনার বিষয়ে হোছন মেম্বারের কাছে তার মুঠোফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে হোছন মেম্বার আমাদের প্রতিনিধিকে জানান।হোছন মেম্বার হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদে এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি বলে অস্বীকার করেন । তবে চেয়ারম্যান বলেছেন ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করেছেন। বলছেন ঘটনা ঘটেনি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি একই উত্তর প্রদান করেন গতকাল হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদে তার সাথে কারো ঝগড়া হয়নি বা ঝগড়ার মতো ঘটনা ঘটেনি।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনার বিস্তারিত জানতে পরিষদ সচিব শেখ ফরিদের মুঠোফোন নাম্বার প্রদান করেন। সচিবের কাছে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে হোছন মেম্বার বর্তমান সরকার দলীয় নেতা হিসাবে দলীয় দাপটে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামিলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সাধারণ মানুষের দলিলি জায়গা জবর দখল করার নানা অভিযোগ রয়েছে।
এই ভূমিদস্যু অপরাধ রাজ্যের সম্রাট হোছন মেম্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশ করার কারণে যাদের জমি জবর দখল করেছে হোছন মেম্বার উল্টো তাদেরকে সংবাদ প্রকাশ করার জের ধরে জমির প্রকৃত মালিকদের বাড়ি ঘরে করে ভাংচুর করে এবং ভবিষ্যতে হোছন মেম্বারের বিরুদ্ধে কোন প্রকার সংবাদ প্রকাশ করা হলে তাদের হত্যা করা হবে বলে হুমকি প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

অপরদিকে মৌলানা আবদুল গফুরকে হেফাজতের নাশকতার মামলার আসামী করার এবং মৌলানা আবদুল গফুরের ছেলেদের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যু হোছন মেম্বার বিভিন্ন মিথ্যা মামলা করে জেলের হুমকি প্রদান করেছে বলে জানিয়েছেন মৌলানা আবদুল গফুর।

হোছন মেম্বারের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতা, মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ভোটার করার মতো জঘন্য রাষ্ট্র দ্রোহীতার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে ।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana