সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৪৬ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করলেন হ্নীলার হাফেজ এরশাদ নাফনদীর হ্নীলা হোয়াইক্যং অংশে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবীতে ইসলামী আন্দোলনের মানববন্ধন হ্নীলা উম্মে সালমা (রাঃ) মহিলা মাদ্রাসার ১৬তম বার্ষিক সভা সম্পন্ন টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপের ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় ১০ আরোহীসহ উড়োজাহাজ নিখোঁজ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন উত্তর শাখা বিএনপির সাংগঠনিক ৯নং ওয়ার্ডের গ্রাম কমিটি গঠিত মধ্যরাতের ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা শাখার সম্মেলন সম্পন্ন গাড়ি চলে দেশে টাকা যায় বিদেশে! 
১১ দিনে ফেরত এসেছেন ৩০ হাজার প্রবাসী

১১ দিনে ফেরত এসেছেন ৩০ হাজার প্রবাসী

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি বর্তমানে কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে এই মহামারির অভিঘাতে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফেরার রথ যেন থামছেই না। প্রতিদিনই চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরছেন অসংখ্য প্রবাসী।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৩ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর এই ১১ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ২৯ হাজার ৮৮৪ জন কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। অর্থাৎ গড় হিসেবে প্রতিদিন ফিরেছেন ২ হাজার ৭১৭ জন করে।

গত ১ এপ্রিল থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় সাত মাসে ২৯টি দেশ থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার ৫৮২ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ১৪৬ জন পুরুষ ও ২৫ হাজার ৪৩৬ জন নারী কর্মী। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকটা হিসেব করলে এই সংখ্যা পৌনে ৩ লাখের বেশি ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান।

সূত্র বলছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় আড়াই লাখ বা তার চেয়ে কিছু বেশি কর্মী দেশে ফেরত আসবেন বলে আশঙ্কা ছিল প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের। আর এ নিয়ে গত দুই থেকে তিন মাস বাংলাদেশি কর্মী ফেরত পাঠানো দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছিল সরকার।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার শুরুর দিকে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের তথ্য নেয়া হয়নি। এক্ষেত্রে করোনাকালে দেশে ফেরত আসাদের সঠিক ডাটা তৈরি এবং আগামী কয়েক মাসের জন্য প্রণোদনাসহ মন্ত্রণালয়ের কিছু ফান্ডিংয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছে তারা।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ৭ লাখ মানুষের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু আগস্ট মাস পর্যন্ত এক লাখ ৮১ হাজার ২৭৩ জন মানুষের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ গত বছর এই সময়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছিল ৪ লাখ ৬ হাজার ৯৬২ জন মানুষের।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর ঢাকা টাইমসকে বলেন, ’প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাই জানে দুই থেকে আড়াই লাখ ফেরত আসবে। যারা ফেরত আসছে তারা আবার যেতে পারবে কি না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। সেক্ষেত্রে এটার একটা ধারাবাহিকতা এবং প্রণোদনাসহ মন্ত্রণালয়ের কিছু ফান্ডিংয়ের প্রস্তুতি রাখতে হবে আগামী কয়েক মাসের জন্য। যারা দেশে এসেছেন তাদের সঠিক একটা ডাটা দরকার। এরা সরকারি সাহায্য চাইতে পারে বা তাদের দরকার হবে, এজন্য তাদের ডাটাবেজ দরকার। প্রথম দিকে দেশে ফেরাদের ডাটা হয়নি। যারা ফেরত আসছেন তারা সবাই যে আবার বিদেশ যেতে পারবেন বা আয়ের ব্যবস্থা করতে পারবেন তা তো নয়। সেক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে তাদেরকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।’

গত সাত মাসে সবচেয়ে বেশি কর্মী ফিরেছেন সৌদি আরব থেকে। সেখানে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস এবং অনেকে কাজ হারিয়ে দেশে এসেছেন। ফিরে আসা ৬০ হাজার ৯৯৬ জন কর্মীর মধ্যে নারী ১০ হাজার ৫০৩ জন।

সৌদি আরবের পর সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক ফেরত পাঠায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি থেকে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা ৫৯ হাজার ৯২০ জন কর্মীর মধ্যে ৪ হাজার ৮৩৮ জন নারী শ্রমিক।

কাজ না থাকায় কাতার থেকে ২৩ হাজার ১১৮ জন শ্রমিককে দেশে ফেরত আসতে হয়। এদের মধ্যে পুরষ ২০ হাজার ৯০৩ জন এবং নারী হাজার ২১৫ জন।

আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনায় অবস্থিত রাষ্ট্র ওমান থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৩ হাজার ৪৮৬ জনকে। তাদের মধ্যে নারী ১ হাজার ৭৯০ জন। মালদ্বীপে কর্মহীন হয়ে পড়েন বিদেশি কর্মীদের অনেকেই। সেখান থেকে ১২ হাজার ১৫৯ জন বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১২ হাজার ৫৫ জন এবং নারী ১০৪ জন।

অন্যদিকে কুয়েত থেকে ২৪৪ জন নারী শ্রমিকসহ ফিরে এসেছেন ১০ হাজার ৮৯৩ জন। ইরাক থেকে ফেরত আসা ৮ হাজার ৮৯২ জনের মধ্যে ৬০ জন নারী। কাজ না থাকায় মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে হয়েছে ১০ হাজার ৮২১ জন শ্রমিককে। যাদের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৩৪২ জন এবং নারী ৪৭৯ জন।

তুরস্ক থেকে ৬৪৭ জন নারী কর্মীসহ ফিরে এসেছেন ৮ হাজার ৫৫৮ জন। লেবানন থেকে ৬ হাজার ৬৯৯ জন, নারী ২ হাজার ২৭৩ জন। কাজের চুক্তি শেষ হওয়ার পর মেয়াদ না বাড়িয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৪ হাজার ৪৬ জনকে। যাদের মধ্যে ৪ হাজার ২৭ পুরুষ এবং ৩৭ জন নারী শ্রমিক।

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় জর্ডান থেকে ২ হাজার ২০৪ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন এবং নারী ১৭ হাজার ৯৬ জন। বাহরাইন থেকে দেশে ফিরেছেন ১ হাজার ৪১১ জন। এসব শ্রমিকরা দেশটি থেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাশ নিয়ে দেশে আসেন।

কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা থেকে ৫৪৮ জন, মরিশাস থেকে ৪৫২ জন, লিবিয়া থেকে ৩১৫ জন এবং ভিয়েতনাম থেকে ১২১ জন ফেরত এসেছে।

কাজ না থাকায় কম্বোডিয়া থেকে ১০৬ জন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ১৩৬ জন, থাইল্যান্ড থেকে ৭৯ জন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৭১ জন এবং মিয়ানমার থেকে ৩৯ জন দেশে ফিরে আসেন।

রাশিয়া থেকে ফিরেছেন ১০০ জন, নেপাল থেকে ৫৫ জন, যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন ৫৩ জন, হংকং থেকে ১৬ জন।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের দেশে ফেরত আসাদের মধ্যে গত ৬ জুলাই ইতালি থেকে করোনা সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো ১৫১ জনও তালিকায় রয়েছে। এছাড়া আইএম জাপান চুক্তির মাধ্যমে তিন বছরের মেয়াদ শেষে জাপান থেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন আটজন কর্মী। এবং অন্যান্য দেশ থেকে ফেরত এসেছে ১২৮ জন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana