শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
টেকনাফের ৩ খুনের নেপথ্যে রহস্য উদঘাটনের আশাবাদী টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল হালিম

টেকনাফের ৩ খুনের নেপথ্যে রহস্য উদঘাটনের আশাবাদী টেকনাফ মডেল থানার ওসি আব্দুল হালিম

▶️টেকনাফের চাঞ্চল্যকর ৩ খুনের রহস্য উদঘাটন ও বিয়ে বাড়ির লুণ্ঠিত স্বর্ণ ও মালামাল উদ্ধার: ▶️এক মাসেই ৩ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮৩ হাজা,৫শ পিস ইয়াবা জব্দ।▶️টেকনাফের গণমানুষের প্রিয় নাম ওসি আব্দুল হালিম।

মুহাম্মদ তাহের নঈম :: 
পুলিশের দর্শন এবং মূলনীতি হলো অপরাধ দমন এবং অনিয়মকে প্রতিহত করা। এই দর্শন এবং মূলনীতিকে কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণের জন্য নিরাপদ ও স্বাভাবিক রাষ্ট্র গঠন করা পুলিশের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাশা করে পুলিশ হবে জনমুখী।

সেই প্রত্যাশা পূরণে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হালিম থানায় যোগদানের সাত মাসের মধ্যে নিজের সততা, মেধা, বিচক্ষণতা কর্মদক্ষতা ও মানবিকতার মাধ্যমে সীমান্ত  উপজেলা টেকনাফের সাধারণ মানুষের মন জয় ও পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সক্ষম হয়েছেন।
জানা যায়,টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হিসাবে মোঃ আব্দুল হালিম গত ৩০/১০/২০২২ তারিখে থানায় যোগদানের পরপরই তার কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগে পাল্টে যায়  উপজেলার দৃষ্টিপট। তিনি প্রকাশ্যে উপজেলা মাসিক সভা ঘোষণা দিয়েই থানাকে সর্বপ্রথম ঘুষ ও দালাল মুক্ত, সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশি সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।

টেকনাফ মডেল থানায় সেবাপ্রার্থী সাধারণ মানুষ যেন কোন হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখেন। পুলিশি সেবা কে জনবান্ধব, হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ওসি আব্দুল হালিম । 
আইনি সেবা দেওয়ার জন্য থানায় খোলা হয়েছে আলাদা আলাদা হেল্প ডেস্ক। যার সুফলও পাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশী মানুষ। এখন ওসির সততা অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে টেকনাফ মডেল থানায় জিডি কিংবা মামলা করতে,পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সেবা পেতে কোন টাকা লাগে না। সেবা প্রত্যাশী টেকনাফের মানুষ এখন পুলিশের কাছে আসতে ভয় পায় না।
টেকনাফ মডেল  থানার ওসি মোঃ  আব্দুল হালিম দৈনিককক্সবাজার৭১ কে জানান, সুন্দর আচারণ ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে আইনগত সেবা প্রদানে টেকনাফ মডেল থানা বদ্ধপরিকর। মান্যবর পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক সহ অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে।
রোহিঙ্গা অধ্যুসিত এলাকা হওয়ায় পুলিশ কে অনেক সময় বেগ পেতে হয়।
গত সাত মাসে তিনি মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের দমন সহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধারে সক্ষম হয়।ধর্মীয় ও সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ সহ বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী কাজের মাধ্যমে বেশ প্রশংসা অর্জন করেছেন তিনি। তার মানবিক আচরণে মানুষের মধ্যে পুলিশের প্রতি শ্রদ্ধা ও আস্থা ফিরে এসেছে।

এলাকার দীর্ঘ দিনের ভূমি বিরোধ মীমাংসা সহ এলাকার বহু পুরাতন বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক উদ্ধার, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল, মানবিক পুলিশিং কার্যক্রম, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বে অবদান রাখা বিট পুলিশিং এর মাধ্যমে সমাধান হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন, জুলুমবাজ, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যু , মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও আইন শৃঙ্খলা আগের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে। মানুষের মুখে শোনা যায় তার প্রশংসার কথা।

টেকনাফ উপজেলার সাধারণ নাগরিকরা বলেন, দেশের প্রতিটি থানার ওসি যদি টেকনাফ মডেল থানার ওসির মতো সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে তাহলে মাদক, চোরাচালান, ঘুষ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত এই দেশ হতো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।
তিনি কাজ করে যাচ্ছে দায়িত্ববোধের সাথে, যা মানুষকে ভালোবাসার এক অন্যরকম বহিঃপ্রকাশ। এজন্য তিনি ‘সাদা মনের পুলিশ হিসেবে ইতোমধ্যে টেকনাফ উপজেলার সবার কাছে পেয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। জেলা পুলিশ কতৃপক্ষ ওসি আব্দুলহালিম কে শ্রেষ্ঠ ওসির পুরস্কার ও দেয়া হয়।
সম্প্রতি টেকনাফে চাঞ্চল্যকর বেশ কয়েকটি ঘটনায় তিনি সুনামের সাথে সাহসী অভিযানে সফলতা পেয়েছে।
গত ১৪ মার্চ কক্সবাজারের টেকনাফ বাহারছড়ায় বিয়েবাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় নববধূর গহনা ও টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতদল।
বাহারছড়া বিয়ে বাড়ির উক্ত ডাকতির মামলায় অজ্ঞাত নামা আসামী তথা ডাকাতদের সনাক্ত করে ঘটনার সহিত জড়িত ৫ জন দূর্ধর্ষ ডাকাতকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তারা সবাই বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে।পরে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে লুন্ঠিন গহনা উদ্ধার করে।
এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডাকাত মিজান, রাসেল, জগির মিস্ত্রি। তারা ডাকাত, অপহরণ, খুনের একাধিক মামলার আসামী।
আরেক চাঞ্চল্যকর ঘটনা,২৮ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে টেকনাফ বন্ধুর পাত্রী দেখতে যাওয়া ৩ যুবক নিখোঁজ হয়। এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এতে বলা হয়, তাদের অপহরণ করা হয়েছে এবং ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। এর সূত্র ধরে টেকনাফ মডেল থানার ওসির দির্দেশে থানা পুলিশ টেকনাফের মুচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে শফি আলম বেলালকে আটক করে। তার তথ্যমতে, র‌্যাবের সহযোগিতায় একই ক্যাম্প থেকে আটক করা হয় তার ভাগ্নে আরাফাতকে। আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন শফি আলম এ ঘটনার পরিকল্পনাকারীদের একজন।
টেকনাফের কোহিনূর নামে এক নারীকে বিয়ের পাত্রী হিসেবে রুবেলকে দেখানোর কথা ছিল শফির।

ওসি জানান, কোহিনূর নামে এই নারী রোহিঙ্গা বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলে ঘটনার মূল রহস্য বের হবে। গত ১৩/৫/২০২৩ তারিখ টেকনাফ থানা পুলিশ শফি আলম নামে এক রোহিঙ্গাকে আটক করে।

সে ২৮/৪/২৩ তারিখে রুবেলকে কোহিনূর নামক একজন মেয়েকে দেখার টোপ দিয়ে রুবেলদের ডেকে আনে। শফির দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে শফির ভাগিনা আরাফাতকে মুচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের হেফাজত হতে রুবেলের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। টেকনাফ থানা পুলিশের শক্তিশালী একটি টিম অপহরণ কারীদের ধরতে গহীন পাহাড়ে একাধিক বার অভিযান পরিচালনা করেছে। গহীন পাহাড়ে ডাকাতদের অস্থায়ী ঘর, আস্তানা ও ভেঙে দেয়া হয়।

এছাড়া গত মাসে ৩ টি অস্ত্র উদ্ধার, ৮৩,৫০০(তিরাশি হাজার পাঁচশত পিস ইয়াবা,২০ ভরি ১২ আনা স্বর্ন, নগদ১,৪৫,০০০ টাকা সহ মূল আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। সর্ব শেষ গত ২৬ মে টেকনাফের নাইট্যং পাড়ায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ৫ মানবপাচারকারী দালাল সহ ১৯ রোহিঙ্গা কে মালয়েশিয়া পাচার কালে উদ্ধার করেছে। ভুক্তভোগীরা জানান,
থানায় অভিযোগ দিতে আসা মানুষের সাথে তিনি (ওসি) হাসিমুখে কথা বলেন।

থানায় সেবাপ্রর্থী মানুষকে ভাল পরামর্শ দিয়ে অনেক মামলা নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। যেখানে অপরাধ সেখানেই ছুটে যান তিনি।এসব কারণে এখন টেকনাফের গণমানুষের জনপ্রিয় নাম ওসি আব্দুল হালিম।

সূত্র: দৈনিক কক্সবাজার৭১।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana