মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০২ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মালয়েশিয়ায় ৬টি পিস্তল সহ ইসরায়েলি নাগরিক আটক: দেশজুড়ে সতর্কতা জারি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ ভুটানের রাজাকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছিনতাইকালে ধরা পড়া দুই পুলিশ সদস্য রিমান্ডে! ২৮ মার্চ জেলা ইসলামী আন্দোলন ইফতার মাহফিল হোটেল অস্টারইকো তে। মিয়ানমারে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিদ্রোহীরা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে মোস্তাফিজ ও বাবুল মিয়ানমারের গ্যং স্টারের বাংলাদেশি সহযোগি হোয়াইক্যং এর দালালরা অধরায়! সাড়ে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা টেকনাফে প্রবেশের অপেক্ষায়! হ্নীলা উম্মে সালমা মহিলা মাদরাসায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
মালয়েশিয়ার সাথে চুক্তির দু’মাস অতিবাহিত: একজন কর্মীও পাঠাতে পারেনি বাংলাদেশ

মালয়েশিয়ার সাথে চুক্তির দু’মাস অতিবাহিত: একজন কর্মীও পাঠাতে পারেনি বাংলাদেশ

মালয়েশিয়ার সাথে জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের (চুক্তি) দু’মাস অতিক্রম হলেও একজন কর্মীও দেশটিতে পাঠাতে পারেনি বাংলাদেশ। যথাযথ কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবে দেশটির টেকনিক্যাল কমিটির বাংলাদেশে আগমনের তারিখ নির্ধারিত হয়নি। মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু হাজার হাজার কর্মী দেশটিতে যাওয়ার জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে। মালয়েশিয়ায় চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিয়ে দালাল চক্র গ্রামাঞ্চলের যুবকদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ও অগ্রিম টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। ইতোপূর্বে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় মালয়েশিয়ায় চাকরির নামে কাউকে টাকা পয়সা ও পাসপোর্ট না দেয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সর্তক করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা মহামারির পর মালয়েশিয়ার বিভিন্ন খাতে প্রচুর অভিবাসী কর্মীর সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ার কেডিএন (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) অভিবাসী কর্মী নিয়োগের জন্য অনুমতি চেয়ে লক্ষাধিক চাহিদাপত্র জমা দিয়েছে দেশটির নিয়োগকর্তারা। মালয়েশিয়া থেকে একাধিক সূত্র এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিদেশি কর্মীনির্ভর মালয়েশিয়া কতটা কর্মী সঙ্কটে আছে তা গত এক সপ্তাহে মালিকপক্ষের আবেদনে এ চিত্র ফুটে উঠেছে। মালয়েশিয়ায় বিদেশিকর্মী নিয়োগে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১১ হাজার ৮০৭টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৭ হাজার ৮৪৮টি উৎপাদন (শ্রমিক) খাতে। বৃক্ষরোপণ ১৩ হাজার ১১৯, পরিষেবা ১০ হাজার ৬১১, নির্মাণ ৮ হাজার ৫৩০ ও কৃষিতে ১ হাজার ৬৯৯টি আবেদন এসেছে। চলতি মাসের ১৫-২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসব আবেদন করা হয়। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানের এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বার্নামা বরাত দিয়ে তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

এম সাভারানান জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে যখন আবেদন নেয়া শুরু হয়েছিল তখন কিছু নিয়োগকর্তার অনলাইন আবেদনে সমস্যা হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রথম মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (এমসিও) বাস্তবায়নের পর ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বিদেশি কর্মীদের আবেদন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। কর্মী সঙ্কট মোকাবিলায় ১৫ ফেব্রুয়ারি পুনরায় চালু করার পর এত সংখ্যক আবেদন এসেছে যাহা চাহিদার চেয়েও বেশি। এম সারাভানান জানান, নিয়োগকর্তাদেরও বেসরকারি খাতের কর্মসংস্থান সংস্থার (এপিএস) মাধ্যমে আবেদন করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল, যা আগে শুধুমাত্র গৃহকর্মীর জন্য অনুমোদিত ছিল। সম্প্রতি নিয়োগকর্তা ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সঙ্গে একটি বৈঠকের সময়, সমস্যার বিষয়ে অবহিত করা হয়েছিল। তারা এই উদ্দেশে এপিএস-এর পরিষেবাগুলো ব্যবহার করেছে। এপিএস নিয়োগকর্তাদের পক্ষ থেকে আবেদন করতে পারেন এই শর্তে যে আবেদনগুলো সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের অনুমতি নিয়ে জমা দেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মানব সম্পদমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, গত ১০ ডিসেম্বর সারাভানান বলেছিলেন, ‘দেশটি কিছু ছিু সেক্টরে নোংরা, বিপজ্জনক, কঠিন সেক্টরগুলোতে তীব্র কর্মী সঙ্কটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যেমন, বৃক্ষরোপণ, উৎপাদন, উন্নয়ন, কৃষি। সরকার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অবশ্যই মালয়েশিয়া প্রবেশের ক্ষেত্রে কর্মীদের প্রবেশের জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) মেনে চলতে হবে যা গত ১৪ ডিসেম্বর কোভিড-১৯ কোয়ার্টেট মিনিস্টার মিটিং দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল।
হাজরে আসওয়াদ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের ওভারসীজ ডিরেক্টর মো. দেলোয়ার হোসেন গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানান, মালয়েশিয়ায় অভিবাসী কর্মীর সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করছে। দেশটির বিভিন্ন খাতে অভিবাসী কর্মীর জন্য চলছে হাহাকার। তিনি জানান, গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশটির শ্রী পোমা প্লান্টিব ইন্ডাস্ট্রিজ এসডিএনবিএইচ ডি, পেপার বেইজ কনভার্টিং এসডিএন বিএইচডি, এম কে এম ইলেক্ট্রনিক্স এসডিএন বিএইচডি, লোটস প্লানটেশন এসডিএন বিএইচডি ও গামা উড এসডি এন বিএইচডি কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার জন্য চাহিদাপত্র অনুমোদনের জন্য কেডিএন (স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে) এ কাগজপত্র জমা দিয়েছে। তিনি বলেন, আল আরাফা এভিয়েশন ও হাজরে আসওয়াদ ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের প্রায় ৯ হাজার ডিমান্ড লেটার পেয়েছে। কর্মী সঙ্কট মোকাবিলায় আরো অনেক আবেদন জমা হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে জনশক্তি রফতানিকারক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ দিন পর মালয়েশিয়ায় কর্র্মী নিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তির দু’মাস পরেও কর্মী প্রেরণে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কোনো তাৎপরতা চোখে পড়ছে না। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার নিযোগকর্তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। তিনি অনতিবিলম্বে দেশটিতে কলিং ভিসায় কর্মী প্রেরণ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার জোর দাবি জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana