রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০১ অপরাহ্ন
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর আগেই সপরিবারে দেশ ছাড়েন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ।
তিনি এখন সিঙ্গাপুরে। বিদেশে বসেই ১৫০টি থেকে ২০০টি গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। তার প্রায় ৩০০ গাড়ি এখনো দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচল করে। এসব গাড়ি থেকে তার দৈনিক আয় ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা। গাড়ি থেকে যে আয় হয় তার বেশির ভাগ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়। যেসব গাড়ি বিক্রি করা হয়েছে তার টাকাও পাচার করা হয়েছে।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর খন্দকার এনায়েত উল্লাহ জোর করে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হয়ে সমিতির নিয়ন্ত্রণ নেন বলেও অভিযোগ আছে। টানা ১৫ বছর সড়ক-মহাসড়ক তার দখলে ছিল। বাস চলাচলের অনুমোদন দিতে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিতেন তিনি। সড়কে চলাচলকারী সব বাস থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়ও করতেন তিনি। প্রতিদিন সড়ক থেকে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলত তার সিন্ডিকেট।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতাসহ কয়েক শত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে খন্দকার এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে পরিবহন সেক্টর থেকে দিনে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। কমিশন অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। এনায়েত উল্লাহ স্ত্রী ও সন্তানদের পালিয়ে গেলেও তার গাড়ির চলাচল থেমে নেই। প্রতিদিন বিভিন্ন সড়কে তার এসি ও নন-এসি মিলিয়ে প্রায় ৩০০ গাড়ি চলাচল করে। গাড়ি থেকে প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা আয় হয়, যার বেশির ভাগ পাচার হচ্ছে।
পরিবহন সমিতি সূত্রে জানা গেছে, এনায়েত উল্লাহর পরিবহন কোম্পানি এনা ট্রান্সপোর্ট প্রাইভেট লিমিটেডের এসি ও নন-এসি মিলিয়ে ৬০০ থেকে ৭০০ গাড়ি ছিল। আরও কয়েকটি কোম্পানিতে তার শেয়ার আছে। নিজের, স্ত্রীর ও সন্তানের নামে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট রয়েছে, প্রচুর ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে। তিনি পাচার করেছেন শত শত কোটি টাকা।
তারা বলেন, এনায়েত উল্লাহ নেতা হিসেবে একটি সড়কে তার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ গাড়ি দিতে পারেন। অন্যদের ৫০ শতাংশ গাড়ি চলাচল করবে।
Leave a Reply