বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০১ অপরাহ্ন
একদিকে বন্যার পানি কমছে, সেই সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে। দেখা দিচ্ছে ত্রাণ, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের চরম সংকট।
বানের পানিতে তলিয়ে যায় শত শত ঘরবাড়ি, সড়ক ও ফসলি জমি। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও। সাচনা-সুনামগঞ্জ রাস্তা দেখলে মনে হয় সুনামির ছাপ।
এদিকে পানি কমতে দেখে অনেকে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে চাইলেও তাদের মাথা গোজার ঠিকানা একমাত্র ঘরটি বানের জলের সঙ্গে ঢেউ খেলছে। আবার অনেকের ঘরের মেঝেতে পা ফেলতে গেলে হাঁটু গেড়ে যায়।
এ অবস্থায় নিজের মাথা গোজাই যেখানে দায়, সেখানে গবাদিপশু গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগি কোথায় রাখবে। আর এ অবস্থায় তাদের খাবার আসবে কোথা থেকে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন জামালগঞ্জের মানুষ।
বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ির সঙ্গে স্রোতে গো-খাদ্যও ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এতে গো-খাদ্যেরও চরম সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মৌসুমি খামারিরা।
আর পানি ও ঘরবাড়ির দিকে তাকালে ক্ষতচিহ্ন বলে দিচ্ছে কতটা ভয়াবহ ছিল বন্যার দিনগুলো।
এদিকে সুরমাসহ পার্শ্ববর্তী ছোট নদ-নদীতে পানি কমতে শুরু করলেও কমেনি হাওড়ের পানি। এখনো পানিবন্দি রয়েছেন ২০০ গ্রামের প্রায় দুই লাখ মানুষ।
স্থানীয় বন্যা দুর্গতরা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা করা হলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। নয়তো দীর্ঘমেয়াদি ভোগান্তির আশঙ্কা থেকেই যাবে।
এদিকে বেহেলী, ফেনারবাঁক ও জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক বাসিন্দা যুগান্তরকে জানান- কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক রাতের মধ্যে ঘরে বন্যার পানি ঢুকে যায়। এভাবে ঘরে পানি ঢুকবে তা ভাবতেও পারেননি তারা।
তারা আরও জানান, বৈশাখের সময় হাওড় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় অনেক ধানের জমি। সারা বছর খাদ্যের সংকটে ভুগবেন- এই চিন্তায় দিন পার করছিলেন তারা। এর মধ্যে আবার বন্যার হানা, যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতোই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, সুরমা, বৌলাই ও রক্তি নদীর পানি কয়েক দিন আগেও বিপৎসীমার ৭৮ থেকে ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা ও রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আর বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ইতোমধ্যে ৪০ টন চাল, আট টন চিড়া, দুই টন মুড়ি ও দুই টন গুড় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে।
Leave a Reply