শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৭ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মালয়েশিয়ায় ৬টি পিস্তল সহ ইসরায়েলি নাগরিক আটক: দেশজুড়ে সতর্কতা জারি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ ভুটানের রাজাকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছিনতাইকালে ধরা পড়া দুই পুলিশ সদস্য রিমান্ডে! ২৮ মার্চ জেলা ইসলামী আন্দোলন ইফতার মাহফিল হোটেল অস্টারইকো তে। মিয়ানমারে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিদ্রোহীরা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে মোস্তাফিজ ও বাবুল মিয়ানমারের গ্যং স্টারের বাংলাদেশি সহযোগি হোয়াইক্যং এর দালালরা অধরায়! সাড়ে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা টেকনাফে প্রবেশের অপেক্ষায়! হ্নীলা উম্মে সালমা মহিলা মাদরাসায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে টেস্ট বাড়ানোর তাগিদ

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে টেস্ট বাড়ানোর তাগিদ

মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে ব্যাপক হারে টেস্ট বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। আর সেক্ষেত্রে অ্যান্টিজেনভিত্তিক র‌্যাপিড টেস্ট কিটের ব্যবহার শুরু করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন তারা।

সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেই কিছুদিন ধরে শীতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার ৭০ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর আজ (মঙ্গলবার) গত ৫৭ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে।

পরিস্থিতিতেই টেস্ট বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তবে করোনা টেস্ট করাতে গিয়ে এখনো হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে।

এমনই একজন রাজধানী ঢাকার খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা রায়হান উদ্দিন রাসেল। সম্প্রতি দু’দিন জ্বরে ভোগার পর চিকিৎসকের পরামর্শে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নমুনা টেস্ট করার জন্য পাঠান তিনি। রায়হান উদ্দিন জানান, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রেজাল্ট দেয়ার নিয়ম থাকলেও সেটি না পেয়ে হটলাইনে ফোন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে গিয়ে সেখানে নিজে পজিটিভ হওয়ার কথা জানতে পারেন তিনি। ‘কৌতূহলবশত ওয়েবসাইটে গিয়ে মোবাইল নম্বর দিয়ে এন্টার চেপে দেখি আমি পজিটিভ’ বলেন তিনি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার নয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কেন এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হয়নি যাতে করে আক্রান্ত রোগীরা তাদের টেস্টের রেজাল্ট অন্তত দ্রুততর সময়ের মধ্যে জানতে পারেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৫ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের করোনা ভাইরাস টেস্ট করা হয়েছে।

গতকাল, যেদিন ৭০ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে, সেদিন পরীক্ষা করা হয়েছিল ১৫ হাজারের বেশি নমুনা। আর গত ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৯০টি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসে দৈনিক টেস্টের সংখ্যা তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, সবচেয়ে বেশি টেস্ট করা হয়েছিল ১২ নভেম্বর। সেদিন ১৭ হাজারের বেশি টেস্ট করা হয়েছিল। আর সর্বনিম্ন ৭ নভেম্বর ১১ হাজারের কিছু বেশি। অর্থাৎ দৈনিক টেস্টের সংখ্যা এখনো গড়ে ১৫ হাজারের বেশি নয়।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্বিতীয় ধাপ সামলাতে এর চেয়ে আরও বেশি পরিমাণে পরীক্ষা করাতে হবে। আর টেস্টের ফলাফল দিতে হবে সবচেয়ে দ্রুততর সময়ের মধ্যে।

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, প্রথম ধাপে পর্যাপ্ত মাত্রায় পরীক্ষা করা হয়নি বলে অনেকে বাদ পড়ে গেছেন। যার কারণে সংক্রমণ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। আর তারাই সংক্রমণের মাত্রা অনেক বেশি হারে ছড়িয়েছে।

তিনি মনে করেন, সেটি এখন বন্ধ করতে হবে। আর সেক্ষেত্রে অ্যান্টিজেন-ভিত্তিক র‌্যাপিড টেস্ট কিট ব্যবহার করে নমুনা টেস্ট করাতে হবে। যাতে আধা ঘণ্টার মধ্যে টেস্টের রেজাল্ট দিয়ে রোগীকে বলা যায় যে তার কোভিড রয়েছে কি না এবং তাকে আইসোলেশনে যেতে হবে কি না।

সুচারুভাবে কন্টাক্ট ট্রেসিং মহামারির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ন্ত্রণের আরেকটি শর্ত বলেও মনে করেন তিনি।

সেই সাথে প্রথম ধাপের মতো ভুল করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে বে-নজীর আহমেদ বলেন, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিনের নিয়ম যথাযথভাবে পালন করতে হবে। জনগণকে মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।

বর্তমানে সারাদেশে ১১৬টি ল্যাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যার মধ্যে ৬৬টি ল্যাব রাজধানী ঢাকায় এবং বাকি ৫০টি ল্যাব ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত।

সরকার বলছে, দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে টেস্টের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এছাড়া অ্যান্টিজেন টেস্ট চালু করার বিষয়েও সরকারের চিন্তা রয়েছে।

তবে এগুলো কবে নাগাদ শুরু হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত আসেনি বলে বলছিলেন আইইডিসিআর-এর পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরিন।

‘টেস্ট বাড়বে। তবে কতটা বাড়বে সেটা বলা যাচ্ছে না। অ্যান্টিজেনভিত্তিক র‌্যাপিড টেস্ট চালু হতে পারে’ বলেন তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে বাংলাদেশে প্রতি সপ্তাহে এক লাখে ৫৫ জনের নমুনা টেস্ট করা হয়। এরমধ্যে ঢাকায় টেস্টের হার সবচেয়ে বেশি যা প্রায় ৬০ ভাগের মতো।

সূত্র -বিবিসি বাংলা

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana