শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মালয়েশিয়ায় ৬টি পিস্তল সহ ইসরায়েলি নাগরিক আটক: দেশজুড়ে সতর্কতা জারি বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে সৌদি আরবের ১৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ ভুটানের রাজাকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটলেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছিনতাইকালে ধরা পড়া দুই পুলিশ সদস্য রিমান্ডে! ২৮ মার্চ জেলা ইসলামী আন্দোলন ইফতার মাহফিল হোটেল অস্টারইকো তে। মিয়ানমারে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বিদ্রোহীরা প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে মোস্তাফিজ ও বাবুল মিয়ানমারের গ্যং স্টারের বাংলাদেশি সহযোগি হোয়াইক্যং এর দালালরা অধরায়! সাড়ে ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা টেকনাফে প্রবেশের অপেক্ষায়! হ্নীলা উম্মে সালমা মহিলা মাদরাসায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
মিয়ানমারের ৫৮ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ!

মিয়ানমারের ৫৮ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ!

মিয়ানমারের ৫৮ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ: সীমান্তের পরিস্থিতি উত্তপ্ত
মুহাম্মদ তাহের নঈম ::
বিদ্রোহীদের আক্রমণে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫৮ সদস্য পালিয়ে বান্দরবনে আশ্রয় নিয়েছেন। দেশটির বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে সীমান্ত পেরিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রুতে অবস্থিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন তারা।

গতকাল রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিজিবির হেডকোয়ার্টার থেকে তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, “সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন তুমব্রু বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। বিকেলে তুমব্রু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

বিজিবির পক্ষে কত সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তা এ পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি। তবে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা যায়,এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৮ জন আশ্রয় নিয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিজিবির এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান,গতকাল (রবিবার) সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে বিজিপি সদস্যরা বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
রোববার সকালে প্রথম দফায়
বিজিপির ১৪ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এরপর বিকেলে আরওড় ৫ বিজিপি সদস্য বিজিবির কাছে আশ্রয় চান। তাদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ বলে জানা গেছে।
এরপর পর্যায়ক্রমে আরও বেশ কিছু বিজিপি সদস্য সীমান্ত রেখা পার হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন।
মিয়ানমারে স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির সঙ্গে চলমান সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ৫৮জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মিডিয়া সেল সূত্রে রোববার রাতে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,
প্রথম দফায় রোববার সকালে বিজিপির ১৪ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এরপর বিকেলে আরও ৫ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে বিজিবির কাছে আশ্রয় চান। তাদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ বলে জানা গেছে।

এরপর পর্যায়ক্রমে আরও বেশ কিছু বিজিপি সদস্য সীমান্ত রেখা পার হয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মোট ৫৮ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

বিজিপির আরও বেশকিছু সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য সীমান্তের শূন্য রেখায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তা বাহিনী ও স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। গোলাগুলি, মর্টার শেল নিক্ষেপের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে সীমান্তবর্তী এলাকা। মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া বুলেট ও মর্টার শেল এসে পড়ছে সীমান্তের এপারে বসতবাড়িগুলোতে।

এতে সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ছে। সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা। কৃষিসহ অন্যান্য দৈনন্দিন কাজে যেতেও ভয় পাচ্ছেন বাসিন্দারা।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন,রোববার ভোর থেকেই মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। এ সময় স্থানীয়দের বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমাদের সীমান্তে থেমে-থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে বরাবরের মতো রোহিঙ্গা এবং বিদ্রোহীরা যেন আমার দেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে তিনি জানান।
হোয়াইকং মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী জানান, আমার ইউপির উলুবনিয়া, খারাংগা ঘুনা এলাকার অনেক বাসিন্দা চরম আতংকে রয়েছে। তাদের নিরাপত্তা জোরদার করা প্রয়োজন।
এদিকে, বরাবরের মতোই সীমান্তে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একজন রোহিঙ্গাকেও আর প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।

টেকনাফ কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার এইচ এম লুৎফুল লাহিল মাজিদ বলেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সীমান্তে অনেকটা উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। রোহিঙ্গাদের নতুন করে অনুপ্রবেশের খবরও রয়েছে আমাদের কাছে। তবে এসব কিছুতে বাংলাদেশ যেন ভুক্তভোগী না হয় সেদিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে সবদিক থেকে। নিরাপত্তায় আমরা কোনো ছাড় দিতে রাজি নই।
ক্যাম্পে নিয়োজিত ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, মিয়ানমারের ভেতরের পরিস্থিতি নিয়ে ক্যাম্পে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের যাতে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয় সেই বিষয়টি আমরা খেয়াল রাখছি। পাশাপাশি প্রতিটি চেকপোস্টে আমাদের কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে প্রবেশ করানো হবে না।
শরণার্থী কমিশন বলছে, নতুন করে যেকোনো অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসান কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমাদের বর্ডার গার্ড (বিজিবি) অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
অপরদিকে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ
বর্ডার গার্ড (বিজিবি)।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design By Rana